হজ ইসলামের মৌলিক একটি ইবাদত ও রুকন। সামর্থবান প্রতিটি নর-নারীর উপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। হাদিসেও হজের বিভিন্ন ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন:
فِیۡہِ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ مَّقَامُ اِبۡرٰہِیۡمَ ۬ۚ وَمَنۡ دَخَلَہٗ کَانَ اٰمِنًا ؕ وَلِلّٰہِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡہِ سَبِیۡلًا ؕ وَمَنۡ کَفَرَ فَاِنَّ اللّٰہَ غَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ
অর্থ: তাতে আছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী, মাকামে ইবরাহীম। যে তাতে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে যারা সেখানে পৌঁছার সামর্থ্য রাখে, তাদের উপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ্জ করা ফরয। কেউ (এটা) অস্বীকার করলে আল্লাহ তো বিশ্ব জগতের সমস্ত মানুষ হতে বেনিয়ায। [সুরা আলে ইমরান; আয়াত: ৯৭]
হাদিসে এসেছে-
ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা. বলেন: তোমরা হজ্জকে উমরাহ ও উমরাহকে হজ্জের অনুগামী কর। (অর্থাৎ হজ্জ করলে উমরাহ ও উমরাহ করলে হজ্জ কর।) কারণ, হজ্জ ও উমরাহ উভয়েই দারিদ্র ও পাপরাশিকে সেইরূপ দূরীভূত করে যেরূপ (কামারের) হাপর লোহার ময়লাকে দূরীভূত করে ফেলে। [নাসাঈ ২৬৩০-২৬৩১, তিরমিযী, নাসাঈ প্রমুখ অন্য সাহাবী হতে, ত্বাবারানী ১১০৩৩]
এ ছাড়াও হজের ফজিলত সম্পর্কে বহু আয়াত ও হাদিস রয়েছে। সাধারণত আমরা জীবনে এক বার হজ পালনের উদ্দেশ্যে বাইতুল্লাহ সফর করে থাকি। পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকার দরুন আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন করে হয়। উক্ত প্রবন্ধে হজের কার্যাবলী সুষ্ঠভাবে পালনার্থে হজের পূর্ণাঙ্গ গাইড ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
হজের সফরে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সমূহ :
লাগেজ ১টি (অবশ্যই ভালো মানের হতে হবে), পিঠে বা কাঁধে ঝুলানোর ব্যাগ ১টি অথবা 18 ইঞ্চি সাইজের হ্যান্ড লাগেজ ১টি, গলায় ঝুলানোর ব্যাগ ১টি, কংকর এর ব্যাগ ১টি, সান গ্লাস ১টি, কোমড় বেল্ট ১টি, পকেট ছাতা,লাগেজ চেনার জন্য পরিচিত কাপড়ের চিহ্ন দিবেন।
লুঙ্গি ২টি, টুপি ২টি, পাঞ্জাবি পায়জামা ৬ সেট, বিছানার সিঙ্গেল চাঁদর ২টি, গামছা বা তোয়ালে ১টি, পাতলা জায়নামাজ ১টি, গা মাজার ছোবা ১টি, কাপড় কাঁচার সাবান, গা মাজা সাবান, গুড়া সাবান প্রয়োজন মোতাবেক, স্যান্ডেল ৩ জোড়া, রশি ১০ গজ, টয়লেট পেপার ৩টি, ব্রাশ, পেস্ট, দাঁত মাজন, মেসওয়াক প্রয়োজন মোতাবেক, মেলামাইন প্লেট, মেলামাইন গ্লাস, ছোট বাটি, টেবিল চামচ ১টি, দস্তরখানা, টুথপিক, কটনবাট, ছোট একটা কাঁচি, কলম ১টি, ছোট নোটবুক, ব্লেড, রেজার, মুজদালিফা অবস্থানের জন্য পাটি, হাত পাখা, সূই-সুতা, নখ কাটার, চিরুনি, সরিষার তৈল, নারিকেল তৈল, ক্রিম, লোশন, ভেজলিন, গ্রিসারিন, ভালো মানের তজবি ১টি, তায়াম্মুমের মাটি ১ টুকরা।
চিড়া ১ কেজি (অবশ্যই পরিষ্কার করে নিবেন ), গুড় আধা কেজি, গুড়া দুধ আধা কেজি।
অভ্যাস থাকলে টি-ব্যাগ, চিনি, পান-সুপারি নিবেন, ইহরাম অবস্থায় জর্দা খাওয়া যাবেনা, প্রয়োজন মনে হলে মুড়ি, চানাচুর, বিস্কুট, আঁচার, তেঁতুল, লবন, শুকনা মরিচ ভাঁজা, কালো জিরার গুড়া, ভাঁজা চিড়া, পাট পাতা ইত্যাদি সাথে নিবেন।
কুরআন শরীফ, দোয়ার কিতাব, হজ্জের বই।
আপনার প্রয়োজনীয় ঔষধ, খাবার স্যালাইন, মুভক্রিম, স্যাভলনক্ৰিম, তুলা, ব্যান্ডেজ, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত কিছু ঔষধ নিবেন।
বি.দ্র.: রেজার, চাকু, ব্লেড, নখকাটার, পান সুপারি, জর্দ্দা, তরল ঔষধ বাধ্যতামূলক বড় লাগেজের মাঝখানে রাখবেন। বিমানের ভেতরে সাথে বহনের ব্যাগ বা লাগেজের ভেতর রাখবেন না।
বাসা থেকে মক্কা পৌঁছা পর্যন্ত সাথের ব্যাগে যা রাখবেন:
গলায় ঝোলানো সাদা ব্যাগ: উপরে অংশে অবশ্যই পাসপোর্ট এবং ভিসা রাখবেন। পিছনের অংশে তায়াম্মুমের মাটি, ১টা কলম, কিছু টয়লেট পেপার ভাঁজ করে। এহরাম অবস্থায় ব্যবহারের জন্য ১ টুকরা সুগন্ধীমুক্ত সাবান এবং তাসবীহ।
হ্যান্ড লাগেজ অথবা কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ: ২সেট কাপড়, ২ সেট ইহরামের কাপড়, ১৫দিনের ঔষধ, হাফ লিটার পানি, হালকা শুকনা খাবার, পাতলা জায়নামাজ, জুতার ব্যাগ, কোমর বেল্ট, সানক্যাপ, ১টা হিজাব।
বিঃদ্রঃ মক্কা এবং মদিনা মসজিদে যাওয়ার সময় সর্বদা জুতার ব্যাগ সাথে নিয়ে যাবেন এবং সাথে পানির বোতল রাখবেন।
পুরুষদের জন্য তামাত্তু হজের উমরার ইহরাম বাধার নিয়মাবলী:
ইহরাম পড়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। নিষিদ্ধ সময় হলে নফল নামাজ না পড়ে শুধু নিয়ত করবেন। এভাবে নিয়ত করুন : “হে আল্লাহ ! আমি তামাত্তু হজ্জের উমরার ইহরাম বাঁধতেছি, সহজ করুন কবূল করুন।”
এরপর কিবলামূখীহয়ে হালকা আওয়াজে তিনবার তালবিয়া পাঠ করতে হবে। ইস্তিগ্ফার, দুরূদ পাঠ করে দোয়া করুন। ইহরাম বাঁধার পর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকুন।
মহিলাদের জন্য তামাত্তু হজের উমরার ইহরাম বাধার নিয়মাবলী:
দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে ইহরাম বাঁধতে হয়। নিষিদ্ধ সময় হলে নফল নামাজ না পড়ে শুধু নিয়ত করবেন। এভাবে নিয়ত করুন : “হে আল্লাহ ! আমি তামাত্তু হজ্জের উমরার ইহরাম বাঁধতেছি, সহজ করুন কবূল করুন।”
এরপর কিবলামূখীহয়ে হালকা আওয়াজে তিনবার তালবিয়া পাঠ করতে হবে। ইস্তিগ্ফার, দুরূদ পাঠ করে দোয়া করুন। ইহরাম বাঁধার পর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকুন।
পুরুষদের জন্য নফল উমরার ইহরাম বাধার নিয়মাবলী:
ইহরাম পড়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। নিষিদ্ধ সময় হলে নফল নামাজ না পড়ে শুধু নিয়ত করবেন। এভাবে নিয়ত করবেন : “হে আল্লাহ ! আমি নফল উমরার ইহরাম বাঁধতেছি, সহজ করুন কবূল করুন।”
এরপর কিবলামূখী হয়ে হালকা আওয়াজে তিনবার তালবিয়া পাঠ করতে হবে। ইস্তিগ্ফার, দুরূদ পাঠ করে দোয়া করুন। ইহরাম বাঁধার পর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকুন।
মহিলাদের জন্য নফল উমরার ইহরাম বাধার নিয়মাবলী:
দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে ইহরাম বাঁধতে হয়। নিষিদ্ধ সময় হলে নফল নামাজ না পড়ে শুধু নিয়ত করবেন। এভাবে নিয়ত করবেন : “হে আল্লাহ ! আমি নফল উমরার ইহরাম বাঁধতেছি, সহজ করুন কবূল করুন।”
এরপর কিবলামূখী হয়ে হালকা আওয়াজে তিনবার তালবিয়া পাঠ করতে হবে। ইস্তিগ্ফার, দুরূদ পাঠ করে দোয়া করুন। ইহরাম বাঁধার পর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকুন।
বি.দ্র.: ইবাদতের হকদার একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। তাই অক্ষম বা মৃত ব্যক্তির জন্য নফল উমরাহ করলে নিয়তের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিয়তের সময় এভাবে বলা যে, ‘অমুকের নামে উমরা করছি’ শিরিক এর অন্তর্ভূক্ত। সঠিক উচ্চারণ হলো: অমুকের পক্ষ থেকে উমরাহ কিংবা তাওয়াফ এর নিয়ত করছি।
মক্কা শরীফে মসজিদে হারামে প্রবেশের পূর্বমুহূর্তে:
মসজিদুল হারামে ডান পা দিয়ে প্রবেশের সময় এই দোয়া পড়ুন : বিসমিল্লাহি ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসুলিল্লাহ, আল্লাহুম্মাফতাহলি আবওয়াবা রাহমাতিক। তারপর মনে মনে ইতিকাফের নিয়ত করা।
বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করার নিয়ম:
হাজরে আসওয়াদের একটু আগে ইজতিবা করে নিয়ত করুন : হে আল্লাহ ! আমি আপনার ঘর তাওয়াফ করার নিয়ত করছি, আপনি আমার জন্য সহজ করুন কবুল করুন। তারপর হাজরে আসওয়াদের সোজা দাড়িয়ে নামাজের ন্যায় হাত তুলে (বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ) বলে হাতের তালু চুম্বন করে ডান দিকে ঘুরে তাওয়াফ শুরু করুন। তাওয়াফের সময় কাবা ঘড়ের দিকে তাকাবেন না এবং তালবিয়া পাঠ করবেন না। হাজরে আসওয়াদ কোন থেকে রুকণে ইয়ামানী কোন পর্যন্ত যে কোনো দোয়া, সূরা, আয়াতুল-কুরসী, দুরূদ, ইস্তেগফার পড়ুন।
রুকুনে ইয়ামানী কোন থেকে হাজরে আসওয়াদ কোন পর্যন্ত “রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াক্বিনা আযাবান নার। ওয়া আদখিলনাল জান্নাতা মাআল আবরার। ইয়া আযিযু ইয়া গাফফার, ইয়া রাব্বাল আলামিন ” হাজরে আসওয়াদ কোন থেকে তাওয়াফ শুরু করে আবার হাজরে আসওয়াদ কোন পর্যন্ত আসলে এক চক্কর পূর্ণ হবে। আবার নামাজের ন্যায় হাত তুলে (বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ) বলে হাতের তালু চুম্বন করে দ্বিতীয় চক্কর শুরু করতে হবে। এভাবে সাত চক্কর পূর্ণ করতে হবে এবং সর্বশেষ চক্করে হাজরে আসওয়াদ কোন বরাবর এসে নামাজের ন্যায় হাত তুলে (বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ) বলে হাতের তালু চুম্বন করে তাওয়াফ শেষ করতে হবে। তাওয়াফ শেষ হলে তাওয়াফের ওয়াজিব দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে।
নামাজের নিয়ত : হে আল্লাহ ! আমি তাওয়াফের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ পড়তেছি।
নামাজ শেষ করে জমজম পানি পান করুন।
ইজতিবা :
ইহরামের গায়ের চাদরকে ডান বগলের নিচে দিয়ে চাদরের উভয় মাথাকে বাম কাঁধের ওপর দিয়ে এক মাথা সামনে আর অন্য মাথা পেছনে ফেলানো। এটা করা পুরুষদের জন্য সুন্নত। তাওয়াফের সময় এভাবে বীর-বাহাদুরি সুলভ ভঙ্গিতে গায়েল চাদর পরিধান করাই হলো ইজতিবা।
রমল :
ফরজ তাওয়াফের প্রথম ৩ চক্করে রমল করেছেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর তাহলো তাওয়াফের সময় মুজাহিদের মতো বীরদর্পে দুই হাত, শরীর ও কাঁধ দুলিয়ে দ্রুত গতিতে চলা।
রমল করার রহস্য :
মুসলমানদের হিজরতের পর মক্কার মুশরিকরা বলাবলি করতে লাগলো যে, ইয়াসরিবে (মদিনা) হিজরতকারী মুসলমানরা আবহাওয়া ও অন্যান্য কারণে দুর্বল ও রুগ্ন হয়ে গেছে। মুশরিকদের এ অহেতুক মিথ্যা অপবাদের প্রেক্ষিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুসলমানদেরকে তাওয়াফের সময় প্রথম ৩ চক্করে রমল তথা বীরদর্পে চলার নির্দেশ দেন। তারপর থেকে আজও সে বিধান অপরিবর্তিত রয়ে গেছে।
তাওয়াফের গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা:
পবিত্র অবস্থায় তাওয়াফ করা আবশ্যক। কোনো কারণে তাওয়াফের সময় অজু ছুটে গেলে তার বিধান নিম্নরূপ :
১. সম্পূর্ণ তাওয়াফ অজু অবস্থায় করা আবশ্যক। যদি তিন চক্কর বা এর চেয়ে কম চক্কর দেওয়ার পর অজু ছুটে যায়, তবে অজু করে নতুনভাবে তাওয়াফ শুরু করা মুস্তাহাব। তবে কেউ অবশিষ্ট তাওয়াফ সম্পন্ন করলেও তা আদায় হয়ে যাবে।
২. আর চার চক্কর বা তার চেয়ে বেশি হলে, অজু করে অবশিষ্ট চক্করগুলো আদায় করবে। তবে কেউ নতুনভাবে শুরু করলেও তা শুদ্ধ হবে।
সায়ী করার নিয়ম:
সাফা পাহাড়ে উঠে কাবার দিকে মুখ করে দুই হাত তুলে তিনবার “আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ” তিনবার ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হাম্দু অ হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির ” পড়ুন, তারপর ইচ্ছে মত দোয়া পড়তে পড়তে মারওয়া পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হওয়া। সবুজ বাতির নিচে বলুন : হে আল্লাহ ! আমাকে মাফ করেন, রহম করেন। মারওয়া পাহাড়ে উঠে কাবা শরীফের দিকে মুখ ফিরিয়ে একইভাবে দোয়া করুন।
বি.দ্র.: সায়ীতে মোট সাত চক্কর দিতে হয়। এক্ষেত্রে সাফা থেকে মারওয়া; অতঃপর মারওয়া থেকে সাফা দুই চক্কর হিসেবে গণ্য হয়। অর্থাৎ মোট সাড়ে তিন চক্কর দিতে হয়।
৮ই জিলহজ্জ্ব হজের ইহরাম বাধার নিয়মাবলী(পুরুষদের জন্য)
ইহরাম পড়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয়। নিষিদ্ধ সময় হলে নফল নামাজ না পড়ে শুধু নিয়ত করবেন। এভাবে নিয়ত করবেন : হে আল্লাহ ! আমি তামাত্তু হজ্জের ইহরাম বাঁধতেছি, সহজ করুন কবূল করুন। এরপর কিবলামূখীহয়ে হালকা আওয়াজে তিনবার তালবিয়া পাঠ করতে হবে। ইস্তিগ্ফার, দুরূদ পাঠ করে দোয়া করুন। ইহরাম বাঁধার পর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকুন।
৮ই জিলহজ্জ্ব হজের ইহরাম বাধার নিয়মাবলী(মহিলাদের জন্য)
দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে ইহরাম বাঁধতে হয়। নিষিদ্ধ সময় হলে নফল নামাজ না পড়ে শুধু নিয়ত করবেন। এভাবে নিয়ত করবেন : হে আল্লাহ ! আমি তামাত্তু হজ্জের ইহরাম বাঁধতেছি, সহজ করুন কবূল করুন। এরপর কিবলামূখীহয়ে হালকা আওয়াজে তিনবার তালবিয়া পাঠ করতে হবে। ইস্তিগ্ফার, দুরূদ পাঠ করে দোয়া করুন। ইহরাম বাঁধার পর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকুন।
মিনায় অবস্থানের জন্য ব্যাগ গোছানো:
এক সেট কাপড়, এক সেট ইহরামের কাপড়, এক জোড়া সেন্ডেল, পাটি, পাতলা জায়নামাজ, অল্প চিড়া গুড়, হাত পাখা, হজ্জের বই, মেসওয়াক, ঔষধ, একটা টয়লেট পেপার।
আরাফার দিবসের আমল:
হাজীদের ৯ই জিলহজ্জ আরাফায় অবস্থান করতে হয়। এ দিনটি হজের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ন একটি দিন।
১. বেশি বেশি সিজদা করা অর্থাৎ নফল নামাজ পড়া। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বেশি বেশি সিজদা করা তোমার দায়িত্ব। কেননা, তুমি যদি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করো তাহলে আল্লাহ তোমার একটি মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন, আর একটি গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। ’ –সহিহ মুসলিম: ৭৮৮
২. নিম্নস্বরে একাকি তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা
“ আল্লাহু আকবার,
আল্লাহু আকবার,
লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার,
আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ ”
৩. আরাফার দিনে বেশি বেশি দোয়া পাঠ করা। আরাফার দিনের উত্তম দোয়া হলো, যেগুলো রাসূলুল্লাহ (সা.) ও পূর্ববর্তী নবীরা পাঠ করেছেন। ওই সব দোয়ার মধ্যে অন্যতম হলো – ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদির। ’ এ ছাড়া আরাফার দিনে আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দোয়া করা। আলেমরা ‘সুবহানাল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’ বেশি বেশি পাঠ করার কথা বলেছেন।
৪. চোখ, কান ও জিহ্বাকে হারাম কাজ থেকে বিরত রাখা। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আরাফার দিবসে যে তার কান, চোখ, জিহ্বাকে সঠিক কাজে ব্যয় করবে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। ’ -শোয়াবুল ঈমান: ৩৭৬৬
৫. কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা।
৬. হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি দরূদ পাঠ করা।
দরূদ শরিফ আরবি :
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ
দরুদ শরীফ বাংলা :
আল্লাহুম্মা ছল্লি আ’লা মুহাম্মাদিও ওয়া আ’লা আ-লি মুহাম্মাদিন, কামা ছল্লাইতা আ’লা ইব্রহীমা ওয়া আ’লা আ-লি ইব্রহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজী-দ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আ’লা আ’লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা আ’লা ইব্রহীমা ওয়া আ’লা আ’লি ইব্রহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।