সহীহ মুসলিমের মুকাদ্দামা; যাতে ইমাম মুসলিম রহ. সহীহ মুসলিম সংকলনের কারণ, হাদিসের রাবীদের অবস্থা এবং স্তর, মুআনআন হাদিস এবং বিভিন্ন রাবীদের হালত সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেছেন। তবে সহীহ মুসলিমের মুকাদ্দামার ইবারত জটিল হওয়ায় অনুবাদ করা বেশ কষ্টসাধ্য। সে কষ্ট লাঘব করার জন্য মুসলিমের মুকাদ্দামার তরজমা নিচে দেওয়া হলো।
তরজমার ক্ষেত্রে পুরো বাক্যের তরজমা একসাথে উঠানোর পরিবর্তে কয়েক শব্দের তরজমা একসাথে করা হয়েছে এবং সরল তরজমার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি, এতে শিক্ষার্থীবৃন্দ উপকৃত হবেন।
সহীহ মুসলিমের মুকাদ্দামার অনুবাদ:
بسم الله الرحمن الرحيم
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক, আল্লাহ তায়ালার জন্য।
وَصَلَّى الله عَلَى مُحَمَّدٍ خَاتَمِ النَّبِيِّينَ
আল্লাহ তাআলা অফুরন্ত রহমত বর্ষণ করুন শেষ নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি
عَلَى جَمِيعِ الْأَنْبِيَاءِ وَالْمُرْسَلِينَ
এবং অন্য সকল নবি রাসুলের প্রতি
أَمَّا بَعْدُ
অতঃপর (হামদ ও সালাতের পর)
إِنَّكَ يَرْحَمُكَ اللهُ
তোমার উপর আল্লাহ তায়ালা মেহেরবানি করুন। নিশ্চয়ই তুমি
أَنَّكَ هَمَمْتَ بِالْفَحْصِ
তুমি ইচ্ছা করেছো গবেষণা করার
عَنْ تَعَرُّفِ جُمْلَةِ الْأَخْبَارِ
ঐ সকল হাদিস জানার জন্য
الْمَأْثُورَةِ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
যেগুলো বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে
فِي سُنَنِ الدِّينِ وَأَحْكَامِهِ
দ্বীনের রীতিনীতি ও আহকাম সম্পর্কে
وَمَا كَانَ مِنْهَا فِي الثَّوَابِ وَالْعِقَابِ، وَالتَّرْغِيبِ وَالتَّرْهِيبِ
এবং যেগুলো বর্ণিত হয়েছে পুরস্কার, শাস্তি তারগীব (উৎসাহ প্রদান) ও তারহীব (ভীতি প্রদর্শন) সম্পর্কে
وَغَيْرِ ذَلِكَ مِنْ صُنُوفِ الْأَشْيَاءِ
এবং এগুলো ছাড়াও আরও অনেক বিষয় সম্পর্কে,
بِالْأَسَانِيدِ الَّتِي بِهَا نُقِلَتْ
ঐ সকল সনদ সহকারে, যেগুলোর মাধ্যমে হাদিস সমূহ বর্ণিত হয়েছে
وَتَدَاوَلَهَا أَهْلُ الْعِلْمِ فِيمَا بَيْنَهُمْ
এবং (যেগুলো) উলামায়ে কেরামের মাঝে ব্যাপকভাবে প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য।
فَأَرَدْتَ، أَرْشَدَكَ اللهُ
আল্লাহ তায়ালা তোমাকে সঠিক পথ দেখান। অতএব তুমি চাও যে,
أَنْ تُوَقَّفَ عَلَى جُمْلَتِهَا
সেগুলো তোমাকে অবহিত করা হোক
مُؤَلَّفَةً مُحْصَاةً
সুবিন্যস্ত ও সীমিত আকারে
সহীহ মুসলিমে হাদিস তাকরার না করার কারণ:
وَسَأَلْتَنِي
তুমি আমার কাছে আবেদন করেছ যে,
أَنْ أُلَخِّصَهَا لَكَ فِي التَّأْلِيفِ
আমি যেন সেটি তোমাকে সংক্ষিপ্ত কিতাব আকারে লিখে দেই।
بِلَا تَكْرَارٍ يَكْثُرُ
অধিক তাকরার ব্যতীত
فَإِنَّ ذَلِكَ
কেননা তা (অধিক তাকরার)
زَعَمْتَ
তোমার ধারণা মতে
مِمَّا يَشْغَلُكَ
তোমাকে বিচ্যুত করবে
عَمَّا لَهُ قَصَدْتَ
ঐ উদ্দেশ্য থেকে, যার তুমি ইচ্ছা করেছো।
مِنَ التَّفَهُّمِ فِيهَا
অর্থাৎ হাদিসগুলো গভীরভাবে অনুধাবন করা
وَالِاسْتِنْبَاطِ مِنْهَا
এবং সেগুলো থেকে মাসআলা উদ্ভাবন করা থেকে
وَلِلَّذِي سَأَلْتَ
আর তুমি যে ব্যাপারে আবেদন করেছো
أَكْرَمَكَ اللهُ
আল্লাহ তায়ালা তোমাকে সম্মানিত করুন।
حِينَ رَجَعْتُ إِلَى تَدَبُّرِهِ
যখন আমি এ বিষয়ে চিন্তা ভাবনার প্রতি মনোনিবেশ করলাম
وَمَا تَؤُولُ بِهِ الْحَالُ
এবং এর পরিণতির কথা ভেবে দেখলাম
إِنْ شَاءَ اللهُ عَاقِبَةٌ مَحْمُودَةٌ
(তখন বুঝলাম) ইনশা আল্লাহ এর পরিণতি প্রশংসনীয় হবে
وَمَنْفَعَةٌ مَوْجُودَةٌ
এবং এর উপকারিতা বাস্তবিকভাবেই লাভ হবে
وَظَنَنْتُ
আর আমি ভেবে দেখলাম
حِينَ سَأَلْتَنِي
যখন তুমি আমাকে অনুরোধ করলে,
تَجَشُّمَ ذَلِكَ
ঐ গুরু দ্বায়িত্ব গ্রহণ করতে
أَنْ لَوْ عُزِمَ لِي عَلَيْهِ
যে, যদি আমাকে এ কাজের তওফিক দেওয়া হয়।
وَقُضِيَ لِي تَمَامُهُ،
এবং এটি পূর্ণ করা (লিখে শেষ করা) আমার ভাগ্যে থাকে।
كَانَ أَوَّلُ مِنْ يُصِيبُهُ نَفْعُ ذَلِكَ
তাহলে সর্বপ্রথম এর দ্বারা যে উপকার লাভ করবে
إِيَّايَ خَاصَّةً
সে হবে একমাত্র আমি
قَبْلَ غَيْرِي مِنَ النَّاسِ
অন্য সকল মানুষের পূর্বে
لِأَسْبَابٍ كَثِيرَةٍ
বিভিন্ন কারণে
يَطُولُ بِذِكْرِهَا الْوَصْفُ
যার বর্ণনা করতে গেলে নিয়ে আলোচনা দীর্ঘ হয়ে যাবে।
হাদিস চর্চায় প্রাথমিক পর্যায়ে করণীয়:
إِلَّا أَنَّ جُمْلَةَ ذَلِكَ
তবে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এই যে,
أَنَّ ضَبْطَ الْقَلِيلِ مِنْ هَذَا الشَّأْنِ
এই বিষয়ের (হাদিস) অল্প কিছু আয়ত্ত করা
وَإِتْقَانَهُ
এবং এ ব্যাপারে দৃঢ়তা অর্জন করা
أَيْسَرُ عَلَى الْمَرْءِ
(সাধারণ) মানুষের জন্য অধিক সহজ
مِنْ مُعَالَجَةِ الْكَثِيرِ مِنْهُ
বহু সংখ্যক হাদিস অর্জনের চেষ্টা করা থেকে
وَلَا سِيَّمَا
বিশেষ করে
عِنْدَ مَنْ لَا تَمْيِيزَ عِنْدَهُ مَنِ الْعَوَامِّ
ঐ সব সাধারণ লোকের জন্য, যারা (সহীহ ও জয়িফ হাদিসের মাঝে) পার্থক্য করতে জানে না
إِلَّا بِأَنْ يُوَقِّفَهُ عَلَى التَّمْيِيزِ غَيْرُهُ
যদি না অন্য কেউ তাকে পার্থক্য নির্ণয় করে দেয়।
فَإِذَا كَانَ الْأَمْرُ فِي هَذَا كَمَا وَصَفْنَا
অতএব এ ক্ষেত্রে বিষয়টি যেহেতু এমনি, যেমনটি আমি বলেছি
فَالْقَصْدُ مِنْهُ إِلَى الصَّحِيحِ الْقَلِيلِ
সুতরাং অল্প কিছু সহীহ হাদিস অর্জনের ইচ্ছা করা
أَوْلَى بِهِمْ
তাদের জন্য উত্তম
مِنَ ازْدِيَادِ السَّقِيمِ
অধিক সংখ্যক দুর্বল হাদিস অর্জন করা থেকে
وَظَنَنْتُ
আর আমি ভেবে দেখলাম
حِينَ سَأَلْتَنِي
যখন তুমি আমাকে অনুরোধ করলে,
تَجَشُّمَ ذَلِكَ
ঐ গুরু দ্বায়িত্ব গ্রহণ করতে
أَنْ لَوْ عُزِمَ لِي عَلَيْهِ،
যে, যদি আমাকে এ কাজের তওফিক দেওয়া হয়।
وَقُضِيَ لِي تَمَامُهُ،
এবং এটি পূর্ণ করা (লিখে শেষ করা) আমার ভাগ্যে থাকে।
كَانَ أَوَّلُ مِنْ يُصِيبُهُ نَفْعُ ذَلِكَ
তাহলে সর্বপ্রথম এর দ্বারা যে উপকার লাভ করবে
إِيَّايَ خَاصَّةً
সে হবে একমাত্র আমি
قَبْلَ غَيْرِي مِنَ النَّاسِ
অন্য সকল মানুষের পূর্বে
لِأَسْبَابٍ كَثِيرَةٍ
বিভিন্ন কারণে
يَطُولُ بِذِكْرِهَا الْوَصْفُ
যার বর্ণনা করতে গেলে নিয়ে আলোচনা দীর্ঘ হয়ে যাবে।
وَإِنَّمَا يُرْجَى بَعْضُ الْمَنْفَعَةِ
অবশ্য কিছু উপকারের আশা করা যায়
فِي الِاسْتِكْثَارِ مِنْ هَذَا الشَّأْنِ
প্রচুর হাদিস মুখস্থ করার মধ্যে ঐ সব বিশিষ্ট লোকদের জন্য
وَجَمْعِ الْمُكَرَّرَاتِ مِنْهُ
এবং তাকরারপূর্ণ হাদিস একত্রিত করার মধ্যে
لِخَاصَّةٍ مِنَ النَّاسِ
ঐ সব বিশিষ্ট লোকদের জন্য
مِمَّنْ رُزِقَ فِيهِ
যাদের হাদিস শাস্ত্র সম্বন্ধে দান করা হয়েছে
بَعْضُ التَّيَقُّظِ
কিছুটা সচেতনতা
وَالْمَعْرِفَةِ بِأَسْبَابِهِ وَعِلَلِهِ
এবং হাদিসের ক্রটি বিচ্যুতি সম্পর্কে কিছু জ্ঞান
فَذَلِكَ إِنْ شَاءَ اللهُ
সুতরাং ঐ সকল লোক ইনশা আল্লাহ
يَهْجُمُ
অর্জন করতে পারবে
بِمَا أُوتِيَ مِنْ ذَلِكَ
তাকে যে যোগ্যতা দেওয়া হয়েছে তার মাধ্যমে
عَلَى الْفَائِدَةِ فِي الِاسْتِكْثَارِ مِنْ جَمْعِهِ
প্রচুর সংখ্যক হাদিস একত্রিত করার মধ্যে ফায়দা (অর্জন করতে পারবে।)
فَأَمَّا عَوَامُّ النَّاسِ
কিন্তু ঐ সব সাধারণ লোক
الَّذِينَ هُمْ بِخِلَافِ مَعَانِي الْخَاصِّ
যারা বিশেষ লোকদের মত নয়,
مِنْ أَهْلِ التَّيَقُّظِ وَالْمَعْرِفَةِ
সচেতনতা ও জ্ঞানের অধিকারী
فَلَا مَعْنَى لَهُمْ
সুতরাং তাদের জন্য কোন জায়গা নেই
فِي طَلَبِ الْكَثِيرِ
প্রচুর হাদিস অর্জনের চেষ্টা করার মধ্যে
وَقَدْ عَجَزُوا عَنْ مَعْرِفَةِ الْقَلِيلِ
কেননা তারা স্বল্প সংখ্যক হাদিস মুখস্থ করতেও অক্ষম।
ثُمَّ إِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ مُبْتَدِئُونَ
অতঃপর আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় শুরু করছি
فِي تَخْرِيجِ مَا سَأَلْتَ وَتَأْلِيفِهِ
তোমার আবেদন অনুযায়ী যাচাই-বাছাই ও সংকলনের কাজ
عَلَى شَرِيطَةٍ
একটি শর্ত সাপেক্ষে
سَوْفَ أَذْكُرُهَا لَكَ
যা আমি এখনই তোমার কাছে উল্লেখ করব,
وَهُوَ إِنَّا نَعْمِدُ إِلَى جُمْلَةِ مَا أُسْنِدَ مِنَ الْأَخْبَارِ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
শর্তটি এই যে, আমরা রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত হাদিস সমূহের প্রতি লক্ষ্য করব।
فَنَقْسِمُهَا عَلَى ثَلَاثَةِ أَقْسَامٍ
অতঃপর সেগুলো তিন ভাগে ভাগ করব
وَثَلَاثِ طَبَقَاتٍ مِنَ النَّاسِ
এবং রাবীগণকেও তিনটি স্তরে বিভক্ত করব
عَلَى غَيْرِ تَكْرَارٍ
তাকরার ব্যতীত
إِلَّا أَنْ يَأْتِيَ مَوْضِعٌ
অবশ্য যদি এমন কোন জায়গা আসে
لَا يُسْتَغْنَى فِيهِ عَنْ تَرْدَادِ حَدِيثٍ
যেখানে হাদিস পুনরাবৃত্তি না করে পারা যায় না। (অর্থাৎ, তাকরার করাটা জরুরি হয়ে পড়ে)
فِيهِ زِيَادَةُ مَعْنًى
যার মধ্যে অতিরিক্ত বিষয় রয়েছে
أَوْ إِسْنَادٌ
অথবা এমন কোন সনদ (এসে যায়)
يَقَعُ إِلَى جَنْبِ إِسْنَادٍ، لِعِلَّةٍ تَكُونُ هُنَاكَ،
যা আরেকটি সনদের পাশে কোন কারণে উল্লিখিত হয়েছে। (তাহলে এ সকল কারণে তাকরার করব।)
لِأَنَّ الْمَعْنَى الزَّائِدَ فِي الْحَدِيثِ الْمُحْتَاجَ إِلَيْهِ
কেননা হাদিসের মধ্যকার প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত বিষয়
يَقُومُ مَقَامَ حَدِيثٍ تَامٍّ
একটি স্বতন্ত্র হাদিসের মর্যাদা রাখে।
فَلَا بُدَّ مِنْ إِعَادَةِ الْحَدِيثِ
এ জন্য ঐ হাদিসকে পুনঃরুল্লেখ করা আবশ্যক হয়ে পড়ে।
الَّذِي فِيهِ مَا وَصَفْنَا مِنَ الزِّيَادَةِ
যার মধ্যে ঐ অতিরিক্ত বিষয়টি রয়েছে
أَوْ أَنْ يُفَصَّلَ ذَلِكَ الْمَعْنَى مِنْ جُمْلَةِ الْحَدِيثِ
অথবা ঐ অতিরিক্ত অংশকে দীর্ঘ হাদিস থেকে পৃথক করব।
عَلَى اخْتِصَارِهِ
সংক্ষিপ্তভাবে
إِذَا أَمْكَنَ
যখন সম্ভব হয়।
وَلَكِنْ تَفْصِيلُهُ رُبَّمَا عَسُرَ مِنْ جُمْلَتِهِ
কিন্তু কখনো কখনো দীর্ঘ হাদিস থেকে এই অতিরিক্ত অংশ পৃথক করা কঠিন হয়ে যায়,
فَإِعَادَتُهُ بِهَيْئَتِهِ إِذَا ضَاقَ ذَلِكَ أَسْلَمُ
তখন হাদিসটিকে হুবহু উল্লেখ করায় উপযোগী হবে যখন অসুবিধা দেখা দেয়।
فَأَمَّا مَا وَجَدْنَا بُدًّا مِنْ إِعَادَتِهِ بِجُمْلَتِهِ
অতএব যেখানে সম্পূর্ণ হাদিস পুনরায় উল্লেখ না করে কাজ চলে
مِنْ غَيْرِ حَاجَةٍ مِنَّا إِلَيْهِ
প্রয়োজন না থাকার কারণে
فَلَا نَتَوَلَّى فِعْلَهُ إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَىসেখানে একাজের (সম্পূর্ণ হাদিস উল্লেখ করার) দায়িত্ব নেব না। ইনশাআল্লাহ।
রাবীদের স্তরের:
فَأَمَّا الْقِسْمُ الْأَوَّلُ
প্রথম ভাগ:
فَإِنَّا نَتَوَخَّى أَنْ نُقَدِّمَ الْأَخْبَارَ
আমরা ইচ্ছা করেছি সর্বপ্রথম হাদিস সংকলন করব,
الَّتِي هِيَ أَسْلَمُ مِنَ الْعُيُوبِ مِنْ غَيْرِهَا، وَأَنْقَى
যেগুলো অন্যান্য হাদিসের তুলনায় অধিক ত্রুটিমুক্ত ও নিরাপদ।
مِنْ أَنْ يَكُونَ نَاقِلُوهَا
কেননা, এই প্রকার হাদিসের রাবীগণ
أَهْلَ اسْتِقَامَةٍ فِي الْحَدِيثِ، وَإِتْقَانٍ لِمَا نَقَلُوا
হাদিস বর্ণনার বিশুদ্ধতা ও দৃঢ়তার অধিকারী।
لَمْ يُوجَدْ فِي رِوَايَتِهِمْ
তাদের বর্ণনার মধ্যে পাওয়া যায় না
اخْتِلَافٌ شَدِيدٌ، وَلَا تَخْلِيطٌ فَاحِشٌ
বড় ধরনের কোন মতানৈক্য বা মারাত্মক কোন গরমিল
كَمَا قَدْ عُثِرَ فِيهِ
যেমনটি জানা গেছে
عَلَى كَثِيرٍ مِنَ الْمُحَدِّثِينَ
অনেক মুহাদ্দিসের ব্যাপারে
وَبَانَ ذَلِكَ فِي حَدِيثِهِمْ
এবং তা স্পষ্ট হয়ে গেছে তাদের বর্ণিত হাদিসের মাধ্যমে।
فَإِذَا نَحْنُ تَقَصَّيْنَا
অতঃপর যখন আমরা তা বর্ণনা করে শেষ করব
أَخْبَارَ هَذَا الصِّنْفِ مِنَ النَّاسِ
এই প্রকার (প্রথম প্রকার) মানুষের (রাবীদের) বর্ণিত হাদিসগুলো,
أَتْبَعْنَاهَا أَخْبَارًا
তখন এগুলোর পরে সংকলন করব ঐ সব হাদিস
يَقَعُ فِي أَسَانِيدِهَا
যেগুলোর সনদে রয়েছেন
بَعْضُ مَنْ لَيْسَ بِالْمَوْصُوفِ بِالْحِفْظِ وَالْإِتْقَانِ
এমন কিছু লোক (রাবী) যারা মেধা ও দৃঢ়তার গুণে গুণান্বিত
الصِّنْفِ الْمُقَدَّمِ قَبْلَهُمْ
পূর্বোক্ত প্রকারের রাবীদের মতো।
لَى أَنَّهُمْ وَإِنْ كَانُوا فِيمَا وَصَفْنَا دُونَهُمْ
এ সক্ত্বেও যে, যদিও যদিও তারা উপরোক্ত গুণাবলি (মেধা, দৃঢ়তা) এর দিক থেকে উক্ত (প্রথম প্রকারের) রাবীদের চেয়ে নিচু স্তরের
فَإِنَّ اسْمَ السَّتْرِ، وَالصِّدْقِ، وَتَعَاطِي الْعِلْمِ
তথাপি প্রকাশ্যে দোয়-ত্রুটি থেকে মুক্ত থাকা, সত্যবাদিতা ও ইলমে হাদিস অর্জনে আত্মনিয়োগ করার গুণাবলি
يَشْمَلُهُمْ
তাদেরকে শামিল করেছে
كَعَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، وَيَزِيدَ بْنِ أَبِي زِيَادٍ، وَلَيْثِ بْنِ أَبِي سُلَيْمٍ، وَأَضْرَابِهِمْ مِنْ حُمَّالِ الْآثَارِ، وَنُقَّالِ الْأَخْبَارِ
যেমন: আতা ইবনে সায়েব, ইয়াজিদ ইবনে আবু যিয়াদ, লাইস ইবনে আবু সুলাইন প্রমুখ হাদিস বর্ণনাকারী রাবীগণ। (এরা দ্বিতীয় স্তরের রাবী)
فَهُمْ وَإِنْ كَانُوا بِمَا وَصَفْنَا مِنَ الْعِلْمِ، وَالسَّتْرِ
এরা যদিও উল্লিখিত গুণাবলি অর্থাৎ দোষ ক্রুটি থেকে মুক্ত থাকা ও ইলমে হাদিস অর্জনের ব্যাপারে
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مَعْرُوفِينَ
উলামায়ে কেরামের নিকট প্রসিদ্ধ;
فَغَيْرُهُمْ مِنْ أَقْرَانِهِمْ
তবুও তাদের সমসাময়িক অন্যান্য রাবীগণ
مِمَّنْ عِنْدَهُمْ مَا ذَكَرْنَا مِنَ الْإِتْقَانِ، وَالِاسْتِقَامَةِ فِي الرِّوَايَةِ
যাদের মধ্যে উল্লিখিত যোগ্যতা অর্থ্যাৎ দৃঢ়তা ও বিশুদ্ধভাবে হাদিস বর্ণনা করার যোগ্যতা রয়েছে।
يَفْضُلُونَهُمْ فِي الْحَالِ وَالْمَرْتَبَةِ
তারা এদের (আতা, ইয়াজিদ ও লাইস) চেয়ে অবস্থা ও মর্যাদার দিক থেকে শ্রেষ্ঠ।
لِأَنَّ هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
কেননা, উলামায়ে কেরাম মুহাদ্দিসগণ) এর নিকট এ বিষয়টি (মেধা ও দৃঢ়তা)
دَرَجَةٌ رَفِيعَةٌ، وَخَصْلَةٌ سَنِيَّةٌ
বিরাট সম্মান ও উঁচু মর্যাদা (এর মানদণ্ড)
أَلَا تَرَى
লক্ষ্য কর
أَنَّكَ إِذَا وَازَنْتَ هَؤُلَاءِ الثَّلَاثَةَ
যখন তুমি তুলনা করবে ঐ তিনজনকে
الَّذِينَ سَمَّيْنَاهُمْ
যাদের নাম আমি উল্লেখ করেছি
عَطَاءً، وَيَزِيدَ، وَلَيْثًا
অর্থাৎ আতা, ইয়াজিদ ও লাইসকে
بِمَنْصُورِ بْنِ الْمُعْتَمِرِ، وَسُلَيْمَانَ الْأَعْمَشِ، وَإِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ
মানসুর ইবনে মুতামির, সুলাইমান ইবনে আমাশ ও ইসমাইল ইবনে আবু খালিদের সাথে
فِي إِتْقَانِ الْحَدِيثِ وَالِاسْتِقَامَةِ فِيهِ
হাদিন বর্ণনার ব্যাপারে বিশুদ্ধতা ও দৃঢ়তার দিক দিয়ে
وَجَدْتَهُمْ مُبَايِنِينَ لَهُمْ
তখন তুমি এদেরকে দেখবে তাদের থেকে ব্যতিক্রম।
لَا يُدَانُونَهُمْ
তারা এদের ধারে কাছেও পৌঁছাতে পারবে না।
لَا شَكَّ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ بِالْحَدِيثِ فِي ذَلِكَ
হাদিস বিশেষজ্ঞ আলেমগণের নিকট এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
لِلَّذِي اسْتَفَاضَ عِنْدَهُمْ
কেননা তাদের ভালোভাবেই জানা আছে
مِنْ صِحَّةِ حِفْظِ مَنْصُورٍ، وَالْأَعْمَشِ، وَإِسْمَاعِيلَ،
মানসুর, আমাশ ও ইসমাইল এর উৎকৃষ্ট মেধা
وَإِتْقَانِهِمْ لِحَدِيثِهِمْ
এবং হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে তাদের দৃঢ়তা সম্বন্ধে
وَأَنَّهُمْ لَمْ يَعْرِفُوا مِثْلَ ذَلِكَ مِنْ عَطَاءٍ، وَيَزِيدَ، وَلَيْثٍ
পক্ষান্তরে আতা, ইয়াজিদ ও লাইস সম্পর্কে তাদের এরূপ জানা নেই।
وَفِي مِثْلِ مَجْرَى هَؤُلَاءِ
আর এদের অনুরূপ
إِذَا وَازَنْتَ بَيْنَ الْأَقْرَانِ
তুমি যখন তুলনা করবে সমকালীনদের সাথে (তখনও তুমি এরূপ পার্থক্য দেখতে পাবে)
كَابْنِ عَوْنٍ، وَأَيُّوبَ السَّخْتِيَانِيِّ
যেমন: ইবনে আউন, আইয়ুব সুখতিয়ানীকে (তুলনা করবে)
مَعَ عَوْفِ بْنِ أَبِي جَمِيلَةَ، وَأَشْعَثَ الْحُمْرَانِيِّ،
আওফ ইবনে আবু জামিলা ও আশআস হুমরানীর সাথে
وَهُمَا صَاحِبَا الْحَسَنِ، وَابْنِ سِيرِينَ
এ দুজন হাসান বসরী ও ইনবে সিরিন (রহ.)-এর ছাত্র
كَمَا أَنَّ ابْنَ عَوْنٍ، وَأَيُّوبَ صَاحِبَاهُمَا
যেমন: ইবনে আওন ও আইউব তাদের শাগরেদ
إِلَّا أَنَّ الْبَوْنَ بَيْنَهُمَا، وَبَيْنَ هَذَيْنِ بَعِيدٌ
কিন্তু এদের মাঝে এবং ওদের মাঝে বিরাট পার্থক্য রয়েছে
فِي كَمَالِ الْفَضْلِ، وَصِحَّةِ النَّقْلِ
যোগ্যতার পূর্ণতা ও বর্ণনার বিশুদ্ধতার দিক দিয়ে।
وَإِنْ كَانَ عَوْفٌ، وَأَشْعَثُ
যদি আওফ ও আশআস
غَيْرَ مَدْفُوعَيْنِ عَنْ صِدْقٍ وَأَمَانَةٍ
সত্যবাদিতা ও আমানতদারির বাইরে নয়
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
উলামায়ে কেরামের নিকটে
وَلَكِنَّ الْحَالَ مَا وَصَفْنَا مِنَ الْمَنْزِلَةِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
তথাপি উলামায়ে কিরামের নিকটে তাদের মর্যাদার দূরত্ব তাই যা আমরা বর্ণনা করেছি।
وَإِنَّمَا مَثَّلْنَا هَؤُلَاءِ فِي التَّسْمِيَةِ
আমি তাদের নাম উল্লেখ করেছি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।
لِيَكُونَ تَمْثِيلُهُمْ سِمَةً
যাতে তাদের দৃষ্টান্ত একটি স্থায়ী নিদর্শনে পরিণত হয়।
يَصْدُرُ عَنْ فَهْمِهَا
যা অনুধাবন করে উপকৃত হবে
مَنْ غَبِيَ عَلَيْهِ طَرِيقُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي تَرْتِيبِ أَهْلِهِ فِيهِ
যারা অজ্ঞ, রাবীদের শ্রেণি বিন্যাসের ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের গৃহীত নীতি-পদ্ধতি সম্পর্কে
فَلَا يَقْصُرُ بِالرَّجُلِ الْعَالِي الْقَدْرِ عَنْ دَرَجَتِهِ
ফলে সে উঁচু তবকার রাবীদের নিম্নস্তরের নামিয়ে দিবে না
وَلَا يُرْفَعُ مُتَّضِعُ الْقَدْرِ فِي الْعِلْمِ فَوْقَ مَنْزِلَتِهِ
এবং ইলমে হাদিসে নিম্নস্তরের রাবীদের উঁচু স্তরে উঠিয়ে দিবো না।
وَيُعْطَى كُلُّ ذِي حَقٍّ فِيهِ حَقَّهُ
বরং এ বিষয়ে (ইলমে হাদিস) যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দিবে
وَيُنَزَّلُ مَنْزِلَتَهُ
এবং প্রত্যেককে উপযুক্ত স্থানে রাখবে।
وَقَدْ ذُكِرَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهَا، أَنَّهَا قَالَتْ: أَمَرَنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نُنَزِّلَ النَّاسَ مَنَازِلَهُمْ
হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “রাসুল (সা.) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন আমরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করি।”
مَعَ مَا نَطَقَ بِهِ الْقُرْآنُ
তাছাড়া কুরআন শরীফেও এ বিষয়ে বর্ণনা রয়েছে।
مِنْ قَوْلِ اللهُ تَعَالَى
অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার বাণী
وَفَوْقَ كُلِّ ذِي عِلْمٍ عَلِيمٌ
সকল জ্ঞানীর ঊর্ধ্বে একজন মহাজ্ঞানী রয়েছেন।
فَعَلَى نَحْوِ مَا ذَكَرْنَا مِنَ الْوُجُوهِ
যাই হোক উল্লিখিত শর্তগুলোর ভিত্তিতে
ؤَلِّفُ مَا سَأَلْتَ مِنَ الْأَخْبَارِ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
তোমার অবেদন অনুযায়ী রাসুল (সা.) থেকে বর্ণিত হাদিসগুলো আমি সংকলন করব
فَأَمَّا مَا كَانَ مِنْهَا عَنْ قَوْمٍ
পক্ষান্তরে যে সব হাদিস এমন রাবীদের থেকে বর্ণিত হবে
هُمْ عِنْدَ أَهْلِ الْحَدِيثِ مُتَّهَمُونَ
যারা হাদিস শাস্ত্রের ইমাম ইমামগণের মতে অভিযুক্ত
أَوْ عِنْدَ الْأَكْثَرِ مِنْهُمْ
কিংবা তাদের অধিকাংশের মতে।
فَلَسْنَا نَتَشَاغَلُ بِتَخْرِيجِ حَدِيثِهِمْ
তাদের বর্ণিত হাদিস সংকলনে আমি লিপ্ত হব না।
كَعَبْدِ اللهِ بْنِ مِسْوَرٍ أَبِي جَعْفَرٍ الْمَدَائِنِيِّ، وَعَمْرِو بْنِ خَالِدٍ، وَعَبْدِ الْقُدُّوسِ الشَّامِيِّ، وَمُحَمَّدِ بْنِ سَعِيدٍ الْمَصْلُوبِ، وَغِيَاثِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، وَسُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرٍو أَبِي دَاوُدَ النَّخَعِيِّ، وَأَشْبَاهِهِمْ
যেমন, আব্দুল্লাহ ইবনে মিসওয়ার আবু জাফর আল মাদায়েনী, আমর ইবনে খালিদ, আব্দুল কুদ্দুস শামী, মুহাম্মদ ইবনে সাঈদ আল মাসলূব, গিয়াস ইবনে ইবরাহীম, সুলাইমান ইবনে আমর, আবু দাউদ নাখায়ী প্রমুখ।
مِمَّنِ اتُّهِمَ بِوَضْعِ الْأَحَادِيثِ، وَتَوْلِيدِ الْأَخْبَارِ
যারা মনগড়া হাদিস রচনা এবং জাল হাদিস বর্ণনার অভিযোগে অভিযুক্ত
وَكَذَلِكَ
অনুরূপভাবে
مَنِ الْغَالِبُ عَلَى حَدِيثِهِ الْمُنْكَرُ، أَوِ الْغَلَطُ
যাদের বর্ণিত হাদিসে মুনকার ও গলদ হাদিসের পরিমাণ বেশী
أَمْسَكْنَا أَيْضًا عَنْ حَدِيثِهِمْ
তাদের বর্ণিত হাদিস গ্রহণ করা থেকে আমি বিরত থাকব।
وَعَلَامَةُ الْمُنْكَرِ فِي حَدِيثِ الْمُحَدِّثِ
আর কোন রাবীর বর্ণিত হাদিস মুনকার হওয়ার আলামত হল,
ذَا مَا عُرِضَتْ رِوَايَتُهُ لِلْحَدِيثِ
যখন তার বর্ণিত হাদিসকে তুলনা করা হয়
عَلَى رِوَايَةِ غَيْرِهِ مَنْ أَهْلِ الْحِفْظِ وَالرِّضَا
অন্য কোন মেধাবী ও নির্ভরযোগ্য রাবীর রেওয়ায়েতের সাথে এমন কিছু হাদিস
خَالَفَتْ رِوَايَتُهُ رِوَايَتَهُمْ
তখন তার রেওয়ায়েতের অন্যদের রেওয়ায়েতের বিপরীত হয়
أَوْ لَمْ تَكَدْ تُوَافِقُهَا
অথবা দুটির মাঝে সামঞ্জস্য বিধান করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।
فَإِذَا كَانَ الْأَغْلَبُ مِنْ حَدِيثِهِ كَذَلِكَ
মোটকথা, তার অধিকাংশ হাদিস যদি এরকম হয়
كَانَ مَهْجُورَ الْحَدِيثِ، غَيْرَ مَقْبُولِهِ، وَلَا مُسْتَعْمَلِهِ
তাহলে তার হাদিস পরিত্যাজ্য হবে, গ্রহণযোগ্য হবে না, আমলযোগ্যও হবে না।
فَمِنْ هَذَا الضَّرْبِ مِنَ الْمُحَدِّثِينَ
এ ধরনের রাবীদের মধ্যে কয়েকজন হল:
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَرَّرٍ، وَيَحْيَى بْنُ أَبِي أُنَيْسَةَ، وَالْجَرَّاحُ بْنُ الْمِنْهَالِ أَبُو الْعَطُوفِ، وَعَبَّادُ بْنُ كَثِيرٍ، وَحُسَيْنُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ ضُمَيْرَةَ، وَعُمَرُ بْنُ صُهْبَانَ
আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাররির, ইয়াহইয়া ইবনে আবু উনাইসা, জাররাহ ইবনে মিনহাল, আবুল আতুফ, আব্বাদ ইবনে কাসির, হুসাইন ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে যুমাইর, উমর ইবনে সহবান
وَمَنْ نَحَا نَحْوَهُمْ فِي رِوَايَةِ الْمُنْكَرِ مِنَ الْحَدِيثِ
এবং যারা অনুসরণ করে মুনকার হাদিস বর্ণনা করেছে।
فَلَسْنَا نُعَرِّجُ عَلَى حَدِيثِهِمْ، وَلَا نَتَشَاغَلُ بِهِ
আমি এদের বর্ণিত হাদিসের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করব না এবং সেগুলো সংকলনের কাজেও লিপ্ত হবো না।
لِأَنَّ حُكْمَ أَهْلِ الْعِلْمِ، وَالَّذِي نَعْرِفُ مِنْ مَذْهَبِهِمْ
কেননা, উলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত এবং তাদের মতামত সম্পর্কে যা জানা যায়
فِي قَبُولِ مَا يَتَفَرَّدُ بِهِ الْمُحَدِّثُ مِنَ الْحَدِيثِ
এককভাবে বর্ণনাকারী রাবী এর বর্ণিত হাদিস গ্রহণ করার ব্যাপারে
أَنْ يَكُونَ قَدْ شَارَكَ الثِّقَاتِ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ وَالْحِفْظِ
সে যদি শরিক থাকে জ্ঞানী ও মেধাবী নির্ভরযোগ্য রাবীদের সাথে
فِي بَعْضِ مَا رَوَوْا
তাদের বর্ণিত কতিপয় হাদিসের দিক দিয়ে
وَأَمْعَنَ فِي ذَلِكَ عَلَى الْمُوَافَقَةِ لَهُمْ
এবং এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে অভিন্নতা রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে
فَإِذَا وُجِدَ كَذَلِكَ
এমনটি যখন পাওয়া গেল
ثُمَّ زَادَ بَعْدَ ذَلِكَ شَيْئًا
তারপর যদি সে বর্ণনা করে এমন কোন অতিরিক্ত বিষয়
لَيْسَ عِنْدَ أَصْحَابِهِ
যা তার সাথীদের রেওয়ায়েতে নেই
قُبِلَتْ زِيَادَتُهُ
তাহলে তার বর্ণিত অতিরিক্ত অংশ গৃহীত হবে
فَأَمَّا مَنْ تَرَاهُ
আর যে রাবীকে তুমি দেখবে
يَعْمِدُ لِمِثْلِ الزُّهْرِيِّ
ইমাম যুহরীর মত (প্রখ্যাত মুহাদ্দিস থেকে হাদিস বর্ণনা করা) এর ইচ্ছা করে
فِي جَلَالَتِهِ
এমতাবস্থায় যে, (হাদিস শাস্ত্রে) তার রয়েছে উচ্চ মর্যাদা
وَكَثْرَةِ أَصْحَابِهِ
এবং (রয়েছে) বহু সংখ্যক ছাত্র।
الْحُفَّاظِ الْمُتْقِنِينَ لِحَدِيثِهِ وَحَدِيثِ غَيْرِهِ
যারা হাফেজে হাদিস এবং তাঁর (যুহরীর) ও অন্যান্য মুহাদ্দিসের হাদিস অত্যন্ত মজবুতভাবে বর্ণনা করে
أَوْ لِمِثْلِ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ،
অথবা হিশাম ইবনে উরওয়া এর মত (মুহাদ্দিস থেকে) হাদিস বর্ণনার ইচ্ছা করে
وَحَدِيثُهُمَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مَبْسُوطٌ مُشْتَرَكٌ
তাদের দুজনের (হিশাম এবং উরওয়ার) বর্ণিত হাদিসগুলো উলামায়ে কেরামের মাঝে বহুল প্রচলিত ও সমাদৃত
قَدْ نَقَلَ أَصْحَابُهُمَا عَنْهُمَا حَدِيثَهُمَا عَلَى الِاتِّفَاقِ مِنْهُمْ فِي أَكْثَرِهِ
উভয়ের ছাত্রবৃন্দ একমত হয়ে তাদের বর্ণিত অধিকাংশ হাদিস রেওয়ায়েত করেন।
فَيَرْوِي عَنْهُمَا، أَوْ عَنْ أَحَدِهِمَا
এখন সে রাবী দুজন থেকে বা দুজনের একজন থেকে বর্ণনা করে
الْعَدَدَ مِنَ الْحَدِيثِ
এমন কিছু হাদিস
مَّا لَا يَعْرِفُهُ أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِهِمَا
যেগুলো তাদের (যুহরী ও হিশামের) কোন ছাত্র জানে না।
وَلَيْسَ مِمَّنْ قَدْ شَارَكَهُمْ فِي الصَّحِيحِ مِمَّا عِنْدَهُمْ
আর সে রাবী ছাত্রদের সাথে তাদের সহীহ রেওয়ায়ের বর্ণনার মধ্যেও শরীক নয়
فَغَيْرُ جَائِزٍ قَبُولُ حَدِيثِ هَذَا الضَّرْبِ مِنَ النَّاسِ وَاللهُ أَعْلَمُ
তাহলে এ ধরণের রাবীর বর্ণিত হাদিস গ্রহণ করা জায়েজ নয়। আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন।
«قَدْ شَرَحْنَا
আমি এখানে ব্যাখ্যা করলাম,
مِنْ مَذْهَبِ الْحَدِيثِ وَأَهْلِهِ
হাদিস শাস্ত্র ও মুহাদ্দিসগণের নীতিমালা থেকে
بَعْضَ مَا
এমন কিছু নীতিমালা
يَتَوَجَّهُ بِهِ
যেগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত
مَنْ أَرَادَ سَبِيلَ الْقَوْمِ، وَوُفِّقَ لَهَا
(এমন ব্যক্তির) যে মুহাদ্দিসগণের পথে চলতে চায় এবং তাদের এ পথে চলার তওফিক দেওয়া হয়েছে।
وَسَنَزِيدُ، إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى شَرْحًا وَإِيضَاحًا
ইনশাআল্লাহ এ বিষয়ে আরো ব্যাখ্যা দেব।
فِي مَوَاضِعَ مِنَ الْكِتَابِ
কিতাবের বিভিন্ন স্থানে
عِنْدَ ذِكْرِ الْأَخْبَارِ الْمُعَلَّلَةِ
ভুল ও ক্রুটিযুক্ত হাদিস সমূহ আলোচনার সময়
إِذَا أَتَيْنَا عَلَيْهَا
যখন সে স্থানে পৌঁছবে
فِي الْأَمَاكِنِ الَّتِي يَلِيقُ بِهَا الشَّرْحُ وَالْإِيضَاحُ
যেখানে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে
إِنْ شَاءَ اللهُ تَعَالَى
ইনশাআল্লাহ
وَبَعْدُ، يَرْحَمُكَ اللهُ
আল্লাহ তোমার প্রতি রহম করুন। অতঃপর
لَوْلَا الَّذِي رَأَيْنَا
আমি যদি না দেখতাম
مِنْ سُوءِ صَنِيعِ كَثِيرٍ
এমন অনেক লোকের মন্দকাজ
مِمَّنْ نَصَبَ نَفْسَهُ مُحَدِّثًا
যারা নিজেদেরকে মুহাদ্দিস বলে দাবি করে
فِيمَا يَلْزَمُهُمْ
ঐ সকল ক্ষেত্রে, যেখানে আবশ্যক ছিল
مِنْ طَرْحِ الْأَحَادِيثِ الضَّعِيفَةِ، وَالرِّوَايَاتِ الْمُنْكَرَةِ
দুর্বল ও মুনকার হাদিসগুলো বর্জন করা
وَتَرْكِهِمُ الِاقْتِصَارَ عَلَى الْأَحَادِيثِ الصَّحِيحَةِ الْمَشْهُورَةِ
আর (যদি না দেখতাম যে,) তারা সহীহ ও মাশহুর হাদিস বর্ণনা করা পরিত্যাগ করেছে
مِمَّا نَقَلَهُ الثِّقَاتُ
যেগুলো বর্ণনা করেছেন নির্ভরযোগ্য রাবীগণ
الْمَعْرُوفُونَ بِالصِّدْقِ وَالْأَمَانَةِ
যারা সত্যবাদিতা ও আমানতদারীতে প্রসিদ্ধ
بَعْدَ مَعْرِفَتِهِمْ وَإِقْرَارِهِمْ بِأَلْسِنَتِهِمْ
অথচ তারা এটা জানে এবং মুখে স্বীকার করে যে,
أَنَّ كَثِيرًا مِمَّا يَقْذِفُونَ بِهِ إِلَى الْأَغْبِيَاءِ مِنَ النَّاسِ
তারা অবুঝ ও অজ্ঞ লোকদের মাঝে যে সব হাদিস ছড়িয়ে বেড়ায় তার অধিকাংশই
هُوَ مُسْتَنْكَرٌ، وَمَنْقُولٌ عَنْ قَوْمٍ غَيْرِ مَرْضِيِّينَ
মুনকার এবং এমন সব অগ্রহণযোগ্য রাবীদের থেকে বর্ণিত
مِمَّنْ ذَمَّ الرِّوَايَةِ عَنْهُمْ أَئِمَّةُ أَهْلِ الْحَدِيثِ
যাদের থেকে হাদিস বর্ণনা করার ব্যাপারে হাদিস শাস্ত্রের অনেক ইমাম সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন।
مِثْلُ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ، وَشُعْبَةَ بْنِ الْحَجَّاجِ، وَسُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ، وَيَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الْقَطَّانِ، وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَهْدِيٍّ، وَغَيْرِهِمْ مِنَ الْأَئِمَّةِ
যেমন: মালেক ইবনে আনাস, শুবা ইবনুল হাজ্জাজ, সুফিয়ান ইবনে উয়ায়না, ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আল কাত্তান, আব্দুর রহমান ইবনে মাহদী প্রমূখ ইমামগণ।
لِمَا سَهُلَ عَلَيْنَا
আমার জন্য কোনোভাবেই সহজ হত না
الِانْتِصَابُ لِمَا سَأَلْتَ مِنَ التَّمْيِيزِ، وَالتَّحْصِيلِ
তোমার আবেদন অনুযায়ী হাদিস যাচাই-বাছাই করা এবং (সহীহ হাদিসগুলো) সংকলনের জন্য প্রস্তুত করা।
وَلَكِنْ مِنْ أَجْلِ مَا أَعْلَمْنَاكَ
কিন্তু যে কারণ আমি তোমাকে বললাম
مِنْ نَشْرِ الْقَوْمِ الْأَخْبَارِ الْمُنْكَرَةِ
অর্থাৎ ঐ (নামধারী মুহাদ্দিসের) দল মুনকার হাদিস সমূহের প্রচার-প্রসার করছে,
بِالْأَسَانِيدِ الضِّعَافِ الْمَجْهُولَةِ
যইফ ও মাজহুল সনদের মাধ্যমে
وَقَذْفِهِمْ بِهَا إِلَى الْعَوَامِّ
এবং সেগুলোকে পৌঁছে দিচ্ছে সাধারণ জনগণের কাছে।
لَّذِينَ لَا يَعْرِفُونَ عُيُوبَهَا
যারা ঐ সব হাদিসের ত্রুটি বিচ্যুতি সম্পর্কে জানে না।
خَفَّ عَلَى قُلُوبِنَا
ফলে আমার জন্য আন্তরিকভাবে সহজ হয়েছে
إِجَابَتُكَ إِلَى مَا سَأَلْتَ
তোমার আবেদনে সাড়া দেওয়া।
وَاعْلَمْ وَفَّقَكَ اللهُ تَعَالَى
আল্লাহ তায়ালা তোমাকে তওফিক দান করুন। আর জেনে রেখো
أَنَّ الْوَاجِبَ عَلَى كُلِّ أَحَدٍ
প্রত্যেকের জন্য এটা অবশ্য কর্তব্য হল
عَرَفَ التَّمْيِيزِ بَيْنَ صَحِيحِ الرِّوَايَاتِ وَسَقِيمِهَا
যে পার্থক্য নির্ণয় করতে সক্ষম সহীহ ও জইফ রেওয়ায়েতের মাঝে
أَنْ لَا يَرْوِيَ مِنْهَا
যে কেবল এ সকল হাদিস বর্ণনা করবে
إِلَّا مَا عَرَفَ صِحَّةَ مَخَارِجِهِ، وَالسِّتَارَةَ فِي نَاقِلِيهِ
যেগুলোর সনদ সহীহ হওয়া এবং রাবী দোষ-ত্রুটি মুক্ত হওয়ার ব্যাপারে জানা আছে।
وَأَنْ يَتَّقِيَ مِنْهَا
যেগুলোর সনদ সহীহ বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকবে
مَا كَانَ مِنْهَا عَنْ أَهْلِ التُّهَمِ
যেগুলো বর্ণিত হয়েছে অভিযুক্ত রাবীদের থেকে
وَالْمُعَانِدِينَ مِنْ أَهْلِ الْبِدَعِ
এবং চরমপন্থি বিদআতী রাবীদের থেকে।
وَالدَّلِيلُ عَلَى أَنَّ الَّذِي قُلْنَا مِنْ هَذَا هُوَ اللَّازِمُ دُونَ مَا خَالَفَهُ
আর এ ব্যাপারে আমি যা বলেছি, তাই মেনে নেওয়া আবশ্যক এবং এর বিরোধিতা করা যাবে না তার দলিল হল
قَوْلُ اللهُ جَلَّ ذِكْرُهُ
আল্লাহ তায়ালার বাণী:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنْ جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَأٍ فَتَبَيَّنُوا أَنْ تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ}
হে মুমিনগণ, তোমাদের নিকট কোন ফাসিক ব্যক্তি যদি কোন সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই-বাছাই করে নিও। যাতে এমন না হয় যে, তোমরা না জেনে কোন সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করে বসলে, তারপর নিজেদের এমন কাজের জন্য অনুতপ্ত হতে হল।
وَقَالَ جَلَّ ثَنَاؤُهُ:
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন:
{مِمَّنْ تَرْضَوْنَ مِنَ الشُّهَدَاءِ}
এমন সাক্ষীদের মধ্য হতে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর। (যারা তোমাদের নিকট গ্রহণযোগ্য)
وَقَالَ عَزَّ وَجَلَّ:
আরো বলেন:
وَأَشْهِدُوا ذَوَيْ عَدْلٍ مِنْكُمْ
তোমরা নিজেদের মধ্য থেকে দুই জন সৎ লোককে সাক্ষী রাখো।
فَدَلَّ بِمَا ذَكَرْنَا مِنْ هَذِهِ الْآيِ
উল্লিখিত আয়াতগুলো এ কথাই প্রমাণ করে
أَنَّ خَبَرَ الْفَاسِقِ سَاقِطٌ غَيْرُ مَقْبُولٍ
ফাসিক লোকের সংবাদ পরিত্যাজ্য, গ্রহণযোগ্য নয়
وَأَنَّ شَهَادَةَ غَيْرِ الْعَدْلِ مَرْدُودَةٌ
এবং তদ্রূপ আদেল নয় এমন লোকের সাক্ষ্যও প্রত্যাখ্যান যোগ্য।
وَالْخَبَرُ وَإِنْ فَارَقَ مَعْنَاهُ مَعْنَى الشَّهَادَةِ
আর খবর এর অর্থ যদিও সাক্ষ্য থেকে ভিন্ন
فِي بَعْضِ الْوُجُوهِ
কিছু দিক দিয়ে
فَقَدْ يَجْتَمِعَانِ فِي أَعْظَمِ مَعَانِيهِمَا
তবুও মৌলিক বিবেচনায় এ দুটি অভিন্ন।
إِذْ كَانَ خَبَرُ الْفَاسِقِ غَيْرَ مَقْبُولٍ
এ কারণেই তো ফাসিকের খবর গ্রহণযোগ্য নয়।
عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ
উলামায়ে কেরামের নিকট।
كَمَا أَنَّ شَهَادَتَهُ مَرْدُودَةٌ عِنْدَ جَمِيعِهِمْ
যেমন তাদের সকলের মতে ফাসেকের সাক্ষ্য প্রত্যাখ্যাত।
وَدَلَّتِ السُّنَّةُ عَلَى نَفْيِ رِوَايَةِ الْمُنْكَرِ مِنَ الْأَخْبَارِ
তদ্রূপ হাদিসও দালালত করে মুনকার হাদিস বর্ণনা না করার উপর।
كَنَحْوِ دَلَالَةِ الْقُرْآنِ
যেমন কুরআন নির্দেশ দিয়েছে
عَلَى نَفْيِ خَبَرِ الْفَاسِقِ
ফাসিকের খবর গ্রহণ না করতে।
فَدَلَّ بِمَا ذَكَرْنَا مِنْ هَذِهِ الْآيِ
উল্লিখিত আয়াতগুলো এ কথাই প্রমাণ করে
أَنَّ خَبَرَ الْفَاسِقِ سَاقِطٌ غَيْرُ مَقْبُولٍ
ফাসিক লোকের সংবাদ পরিত্যাজ্য, গ্রহণযোগ্য নয়
وَأَنَّ شَهَادَةَ غَيْرِ الْعَدْلِ مَرْدُودَةٌ
এবং তদ্রূপ আদেল নয় এমন লোকের সাক্ষ্যও প্রত্যাখ্যান যোগ্য।
وَدَلَّتِ السُّنَّةُ عَلَى نَفْيِ رِوَايَةِ الْمُنْكَرِ مِنَ الْأَخْبَارِ
وَدَلَّتِ السُّنَّةُ عَلَى نَفْيِ رِوَايَةِ الْمُنْكَرِ مِنَ الْأَخْبَارِতদ্রুপ হাদিস শরীফও নির্দেশ দেয় মুনকার হাদিস বর্ণনা না করতে
كَنَحْوِ دَلَالَةِ الْقُرْآنِ
যেমন কুরঅন শরীফ নির্দেশ দিয়েছে
عَلَى نَفْيِ خَبَرِ الْفَاسِقِ
ফাসিকের সংবাদ গ্রহণ না করতে।
وَهُوَ الْأَثَرُ الْمَشْهُورُ عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আর তা হল রাসুল (সা.) এর প্রসিদ্ধ হাদিস
«مَنْ حَدَّثَ عَنِّي بِحَدِيثٍ يُرَى أَنَّهُ كَذِبٌ، فَهُوَ أَحَدُ الْكَاذِبِينَ»
যে ব্যক্তি আমার থেকে কোন হাদিস বর্ণনা করে, যার সম্পর্কে তার ধারণা হল: এটি মিথ্যা। তাহলে সে নিজেও মিথ্যাবাদীদের একজন।
মূল কিতাবের ২০ নাম্বার পৃষ্ঠার পর থেকে…
قَالَ مُسْلِمٌ
ইমাম মুসলিম (রহ.) বলেন:
وَأَشْبَاهُ مَا ذَكَرْنَا
এ ধরনের কথা, যা আমরা উল্লেখ করেছি
مِنْ كَلاَمِ أَهْلِ الْعِلْمِ
অর্থাৎ উলামায়ে কেরামের সমালোচনা,
فِي مُتَّهَمِي رُوَاةِ الْحَدِيثِ
অভিযুক্ত রাবীদের সম্পর্কে
وَإِخْبَارِهِمْ عَنْ مَعَايِبِهِمْ
এবং তাদের দোষ-ত্রুটি সম্পর্কে তাদের বর্ণনা
كَثِيرٌ
এত বেশি যে,
يَطُولُ الْكِتَابُ بِذِكْرِهِ عَلَى اسْتِقْصَائِهِ
সেগুলোর বিশদ বিবরণ দিতে গেলে কিতাব দীর্ঘ হয়ে যাবে।
وَفِيمَا ذَكَرْنَا كِفَايَةٌ
এ লোকের জন্য যে জানতে ও বুঝতে চায়
لِمَنْ تَفَهَّمَ وَعَقَلَ
এ লোকের জন্য যে জানতে ও বুঝতে চায়
مَذْهَبَ الْقَوْمِ
হাদিস শাস্ত্রের ইমামগণের দৃষ্টিভঙ্গি
فِيمَا قَالُوا مِنْ ذَلِكَ وَبَيَّنُوا.
এ বিষয়ে তারা যা কিছু বলেছেন এবং বর্ণনা করেছে তার মধ্যে।
وَإِنَّمَا أَلْزَمُوا أَنْفُسَهُمُ
আর তারা নিজেদের উপর আবশ্যক করে নিয়েছেন
الْكَشْفَ عَنْ مَعَايِبِ رُوَاةِ الْحَدِيثِ وَنَاقِلِي الأَخْبَارِ
হাদিস বর্ণনাকারী রাবীগণের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করাকে
وَأَفْتَوْا بِذَلِكَ
এবং এর পক্ষে ফতওয়া দিয়েছেন
حِينَ سُئِلُوا
যখন তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে
(যে, দুর্বল রাবীদের সমালোচনা করা জায়েজ কি না?)
لِمَا فِيهِ مِنْ عَظِيمِ الْخَطَرِ
কারণ, এর মধ্যে রয়েছে বহু ফায়দা
إِذِ الأَخْبَارُ فِي أَمْرِ الدِّينِ
কারণ দ্বীনি কোন বিষয় রেওয়ায়েত করলে
إِنَّمَا تَأْتِي بِتَحْلِيلٍ أَوْ تَحْرِيمٍ
তা প্রমাণ করবে হালাল-হারাম,
أَوْ أَمْرٍ أَوْ نَهْىٍ أَوْ تَرْغِيبٍ أَوْ تَرْهِيبٍ
বিধি-নিষেধ কিংবা তারগীব-তারহীব
فَإِذَا كَانَ الرَّاوِي لَهَا
সুতরাং যখন হাদিসের রাবী
لَيْسَ بِمَعْدِنٍ لِلصِّدْقِ وَالأَمَانَةِ
সত্যবাদিতা ও আমানত রক্ষাকারী না হয়
ثُمَّ أَقْدَمَ عَلَى الرِّوَايَةِ عَنْهُ
তারপর তার থেকে হাদিস বর্ণনা করতে অগ্রসর হয়
مَنْ قَدْ عَرَفَهُ
(এমন লোক) যে তাকে চিনে
وَلَمْ يُبَيِّنْ مَا فِيهِ لِغَيْرِهِ
কিন্তু ঐ রাবীর দোষ-ত্রুটি বলে দেয় না অন্যদের কাছে
مِمَّنْ جَهِلَ مَعْرِفَتَهُ
যারা তার (রাবীর) পরিচয় (অবস্থা) জানে না
كَانَ آثِمًا بِفِعْلِهِ ذَلِكَ
তাহলে সে তার এ কাজের কারণে গোনাহগার হবে।
غَاشًّا لِعَوَامِّ الْمُسْلِمِينَ
সাধারণ মুসলমানের সাথে প্রতারণাকারী বলে গণ্য হবে।
إِذْ لاَ يُؤْمَنُ
কেননা, এ ব্যাপারে চিন্তামুক্ত হওয়া যায় না যে,
عَلَى بَعْضِ مَنْ سَمِعَ تِلْكَ الأَخْبَارَ
ঐ সব হাদিস শ্রবণকারী কিছু লোক
أَنْ يَسْتَعْمِلَهَا
ঐ হাদিসগুলোর সবকটির উপরে আমল করবে
أَوْ يَسْتَعْمِلَ بَعْضَهَا
অথবা এগুলোর কতিপয়ের উপরে আমল করবে
لَعَلَّهَا أَوْ أَكْثَرَهَا
অথচ হয়ত ঐ হাদিসগুলোর সবগুলো কিংবা অধিকাংশই হল
أَكَاذِيبُ لاَ أَصْلَ لَهَا
মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
مَعَ أَنَّ الأَخْبَارَ الصِّحَاحَ
তাছাড়া সহীহ হাদিস সমূহ
مِنْ رِوَايَةِ الثِّقَاتِ وَأَهْلِ الْقَنَاعَةِ
যেগুলো নির্ভরযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য রাবীদের থেকে বর্ণিত
أَكْثَرُ
সেগুলোর সংখ্যা এত বেশি যে,
مِنْ أَنْ يُضْطَرَّ إِلَى نَقْلِ مَنْ لَيْسَ بِثِقَةٍ وَلاَ مَقْنَعٍ.
অগ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য লোকদের রেওয়াতের গ্রহণ করার কোনও প্রয়োজন নেই।
وَلاَ أَحْسِبُ
আমি মনে করি না
كَثِيرًا مِمَّنْ يُعَرِّجُ مِنَ النَّاسِ
এমন লোকদের সংখ্যা যারা লিপ্ত হয়
عَلَى مَا وَصَفْنَا مِنْ هَذِهِ الأَحَادِيثِ الضِّعَافِ وَالأَسَانِيدِ الْمَجْهُولَةِ
ঐ সব দুর্বল হাদিস ও মাজহুল সনদের উপরে যেগুলোর অবস্থা আমি ইতিপূর্বে বর্ণনা করেছি
وَيَعْتَدُّ بِرِوَايَتِهَا
এবং সেগুলো রেওয়ায়েত করার যোগ্য মনে করে
بَعْدَ مَعْرِفَتِهِ بِمَا فِيهَا مِنَ التَّوَهُّنِ وَالضَّعْفِ
এবং সেগুলোকে রেওয়ায়েতগুলোর মধ্যকার দোষ-ত্রুটি ও দুর্বলতা সম্পর্কে জানা থাকা সত্ত্বেও
إِلاَّ أَنَّ الَّذِي يَحْمِلُهُ
তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে
عَلَى رِوَايَتِهَا وَالاِعْتِدَادِ بِهَا
ঐ সব হাদিস রেওয়ায়েত করতে এবং সেগুলোকে গুরুত্ব দিতে
إِرَادَةُ التَّكَثُّرِ بِذَلِكَ عِنْدَ الْعَوَامِّ
কেবল এর দ্বারা জনসাধারণের মাঝে প্রচুর হাদিস বর্ণনাকারী (হিসেবে পরিচিত) হওয়ার আগ্রহ।
وَلأَنْ يُقَالَ
আর এ জন্য যে, (তার সম্বন্ধে) বলা হবে
مَا أَكْثَرَ مَا جَمَعَ فُلاَنٌ مِنَ الْحَدِيثِ
অমুক মুহাদ্দিস কত হাদিস একত্রিত করেছেন
وَأَلَّفَ مِنَ الْعَدَدِ.
এবং তিনি কত কিতাব সংকলনের করেছেন।
وَمَنْ ذَهَبَ فِي الْعِلْمِ هَذَا الْمَذْهَبَ
আর যে ব্যক্তি ইলমে হাদিসের ক্ষেত্রে এমন নীতি অবলম্বন করে
وَسَلَكَ هَذَا الطَّرِيقَ
এবং এ ধরনের পথে চলে
فَلاَ نَصِيبَ لَهُ فِيهِ
এর মধ্যে (ইলমে হাদিসের মধ্যে) তার কোন অংশ নেই
وَكَانَ بِأَنْ يُسَمَّى جَاهِلاً
এই ব্যক্তি মূর্খ বলে গণ্য করা
أَوْلَى مِنْ أَنْ يُنْسَبَ إِلَى عِلْمٍ.
অধিক উত্তম, তাকে আলেম নামে অভিহিত করার চেয়ে।
হাদিসে মুআনআন:
وَقَدْ تَكَلَّمَ
আর মতামত প্রকাশ করেছেন
بَعْضُ مُنْتَحِلِي الْحَدِيثِ مِنْ أَهْلِ عَصْرِنَا
আমাদের যুগের কতিপয় স্বঘোষিত মুহাদ্দিস
فِي تَصْحِيحِ الأَسَانِيدِ وَتَسْقِيمِهَا
সনদ সমূহকে সহীহ ও যইফ সাব্যস্ত করার ব্যাপারে
بِقَوْلٍ
এমন মতামত
لَوْ ضَرَبْنَا عَنْ حِكَايَتِهِ وَذِكْرِ فَسَادِهِ صَفْحًا
যদি আমি তা বর্ণনা করা এবং তার সমালোচনা থেকে বিরত থাকতে পারতাম
لَكَانَ رَأْيًا مَتِينًا وَمَذْهَبًا صَحِيحًا.
তাহলে সেটাই হত উপযুক্ত সিদ্ধান্ত ও সঠিক পদক্ষেপ
إِذِ الإِعْرَاضُ عَنِ الْقَوْلِ الْمُطَّرَحِ أَحْرَى
কেননা অবাঞ্ছিত মতবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখাই সবচেয়ে ভাল
لإِمَاتَتِهِ
সেটিকে (ঐ মতবাদকে) নির্মূল করার জন্য
وَإِخْمَالِ ذِكْرِ قَائِلِهِ
তার প্রবক্তার আলোচনা স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য
وَأَجْدَرُ
এবং আরও ভালো হয় (আলোচনা থেকে বিরত থাকা) এ কারণে যে,
أَنْ لاَ يَكُونَ ذَلِكَ تَنْبِيهًا لِلْجُهَّالِ عَلَيْهِ
তাহলে এটা (আলোচনা করাটা) অজ্ঞদের (নতুন করে) জানার কারণ হকে পারবে না।
غَيْرَ أَنَّا لَمَّا تَخَوَّفْنَا
কিন্তু আমরা যখন শঙ্কিত হলাম
مِنْ شُرُورِ الْعَوَاقِبِ
মন্দ পরিণতি নিয়ে
وَاغْتِرَارِ الْجَهَلَةِ بِمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ
আর (এই ভেবে যে,) নতুন নতুন কথায় অজ্ঞ লোকেরা প্রতারিত হবে
وَإِسْرَاعِهِمْ
এবং তারা দ্রুত বিশ্বাস স্থাপন করবে
إِلَى اعْتِقَادِ خَطَإِ الْمُخْطِئِينَ
বিভ্রান্ত লোকদের ত্রুটিযুক্ত আকিদায়
وَالأَقْوَالِ السَّاقِطَةِ عِنْدَ الْعُلَمَاءِ
ও উলামায়ে কেরামের নিকটে অগ্রহণযোগ্য মতামতে
رَأَيْنَا
(তখন) আমরা মনে করলাম
الْكَشْفَ عَنْ فَسَادِ قَوْلِهِ
তার মতামতের ভুল-ত্রুটি প্রকাশ করে দেওয়া
وَرَدَّ مَقَالَتِهِ
এবং তার বক্তব্যকে খণ্ডন করা
بِقَدْرِ مَا يَلِيقُ بِهَا مِنَ الرَّدِّ
যতটুকু খণ্ডন করা দরকারে
أَجْدَى عَلَى الأَنَامِ
এবং মানুষের জন্য অধিক উপযোগী
وَأَحْمَدَ لِلْعَاقِبَةِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ.
এবং প্রশংসনীয় হবে পরিণামে। ইনশাআল্লাহ!
وَزَعَمَ الْقَائِلُ
উক্ত প্রবক্তা মনে করেন
الَّذِي افْتَتَحْنَا الْكَلاَمَ عَلَى الْحِكَايَةِ عَنْ قَوْلِهِ
আমরা আলোচনা শুরু করেছিলাম যার বক্তব্য তুলে ধরার জন্য
وَالإِخْبَارِ عَنْ سُوءِ رَوِيَّتِهِ
এবং যার ভ্রান্ত চিন্তাধারা সম্পর্কে অবহিত করার জন্য
أَنَّ كُلَّ إِسْنَادٍ لِحَدِيثٍ
(সে মনে করে) কোন হাদিসের এমন সনদ
فِيهِ فُلاَنٌ عَنْ فُلاَنٍ
যার মধ্যে فُلاَنٌ عَنْ فُلاَنٍ থাকবে
وَقَدْ أَحَاطَ الْعِلْمُ
এবং এটা জানা তাকে যে,
بِأَنَّهُمَا قَدْ كَانَا فِي عَصْرٍ وَاحِدٍ
তারা (রাবী ও মারবী আনহু) উভয়ে একই যুগে ছিলেন।
وَجَائِزٌ
আর সম্ভাবনা আছে যে
أَنْ يَكُونَ الْحَدِيثُ الَّذِي رَوَى الرَّاوِي عَمَّنْ رَوَى عَنْهُ
(হয়ত) যে হাদিসটি বারী মরবী তা তিনি মারবী আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন
قَدْ سَمِعَهُ مِنْهُ
তা তিনি মারবী আনহু থেকে সরাসরি শুনেছেন
وَشَافَهَهُ بِهِ
এবং সামনা-সামনিই গ্রহণ করেছেন।
غَيْرَ أَنَّهُ لاَ نَعْلَمُ لَهُ مِنْهُ سَمَاعًا
তবে আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না যে, রাবী মারবী আনহু থেকে সরাসরি শুনুছেন (কি না?)
وَلَمْ نَجِدْ فِي شيء مِنَ الرِّوَايَاتِ
আর কোন রেওয়ায়েতের মধ্যেও আমরা এরূপ পাইনি
أَنَّهُمَا الْتَقَيَا قَطُّ
তাদের দুজনের তখনও সাক্ষাৎ হয়েছিল
أَوْ تَشَافَهَا بِحَدِيثٍ
কিংবা তারা সরাসরি কোনও হাদিসের আদান-প্রদান করেছেন
أَنَّ الْحُجَّةَ لاَ تَقُومُ عِنْدَهُ بِ
ঐ লোকের মতে, দলিল দেওয়া যাবে না।
بِكُلِّ خَبَرٍ
ঐ সকল হাদিস দ্বারা
جَاءَ هَذَا الْمَجِيءَ
যেগুলো এ পন্থায় বর্ণিত হয়ে এসেছে
حَتَّى يَكُونَ عِنْدَهُ الْعِلْمُ
যতক্ষণ না তার নিকট প্রমাণিত হয় যে,
بِأَنَّهُمَا قَدِ اجْتَمَعَا مِنْ دَهْرِهِمَا
তারা দুজন তাদের যুগ মিলিত হয়েছেন
مَرَّةً فَصَاعِدًا
একবার বা একাধিকবার
أَوْ تَشَافَهَا بِالْحَدِيثِ بَيْنَهُمَا
অথবা সরাসরি কোন হাদিসের আদান-প্রদান করেছেন
أَوْ يَرِدَ خَبَرٌ
কিংবা এমন কোন রেওয়ায়েত পাওয়া যায়
فِيهِ بَيَانُ اجْتِمَاعِهِمَا وَتَلاَقِيهِمَا
যাতে বর্ণিত হয়েছে তাদের মিলন ও সাক্ষাতের কথা
مَرَّةً مِنْ دَهْرِهِمَا فَمَا فَوْقَهَا
জীবনে এক বা একাধিকবার,
َ
সুতরাং তার (স্বঘোষিত মুহাদ্দিস) যদি এমন কিছু জানা না থাকে
وَلَمْ تَأْتِ رِوَايَةٌ صَحِيحَةٌ
আর এমন কোন সহীহ রেওয়ায়েত না পাওয়া যায়
تُخْبِرُ أَنَّ هَذَا الرَّاوِيَ عَنْ صَاحِبِهِ
যা প্রমাণ করে যে, রাবী তার মারবী আনহুর সাথে
قَدْ لَقِيَهُ مَرَّةً وَسَمِعَ مِنْهُ شَيْئًا-
একবার সাক্ষাৎ করেছেন এবং তরে থেকে কোন হাদিস শুনেছেন
لَمْ يَكُنْ فِي نَقْلِهِ الْخَبَرَ عَمَّنْ رَوَى عَنْهُ ذَلِكَ
তাহলে ঐ রাবী যে উস্তাদ থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন তার থেকে হাসিদ বর্ণনা করাটা
وَالأَمْرُ كَمَا وَصَفْنَا
উপরোক্ত সুরতে
حُجَّةٌ
দলিল (দেওয়ার যোগ্য) হবে না
وَكَانَ الْخَبَرُ عِنْدَهُ مَوْقُوفًا
এবং তার (স্বঘোষিত মুহাদ্দিস) মতে হাদিসটি স্থগিত থাকবে,
حَتَّى يَرِدَ عَلَيْهِ
যতক্ষণ না তার কাছে প্রমাণিত হয়
سَمَاعُهُ مِنْهُ لِشَيْءٍ مِنَ الْحَدِيثِ
রাবী মারবী আনহু থেকে হাদিস শোনার বিষয়টি
. قَلَّ أَوْ كَثُرَ
কম বা বেশি
فِي رِوَايَةٍ مِثْلِ مَا وَرَدَ
এমন কোন রেওয়ায়েতের মাধ্যমে (প্রমাণিত হবে) যা, উক্ত হাদিসটির সমপর্যায়ের (সনদের দিক থেকে)
فَإِنْ لَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ عِلْمُ ذَلِكَ
সুতরাং তার (স্বঘোষিত মুহাদ্দিস) যদি এমন কিছু জানা না থাকে
وَلَمْ تَأْتِ رِوَايَةٌ صَحِيحَةٌ
আর এমন কোন সহীহ রেওয়ায়েত না পাওয়া যায়
تُخْبِرُ أَنَّ هَذَا الرَّاوِيَ عَنْ صَاحِبِهِ
যা প্রমাণ করে যে, রাবী তার মারবী আনহুর সাথে
باب صِحَّةِ الاِحْتِجَاجِ بِالْحَدِيثِ الْمُعَنْعَنِ
وَهَذَا الْقَوْلُ- يَرْحَمُكَ اللَّهُ- فِي الطَّعْنِ فِي الأَسَانِيدِ
(ইমাম মুসলিম রহ. বলেন) আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন। এই অভিমতটি হাদিসের সনদ সমূহের উপর অভিযোগ এর ক্ষেত্রে
قَوْلٌ مُخْتَرَعٌ مُسْتَحْدَثٌ
একটি মনগড়া ও অভিনব মন্তব্য
غَيْرُ مَسْبُوقٍ صَاحِبُهُ إِلَيْهِ
এই মতের প্রবক্তা পূর্বে কেউ ছিল না,
وَلاَ مُسَاعِدَ لَهُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَيْهِ
এবং হাদিসের ইমামগণের মধ্যে এ বিষয়ে তার কোন সমর্থন নেই।
وَذَلِكَ
আর এটা এ কারণে যে,
أَنَّ الْقَوْلَ الشَّائِعَ الْمُتَّفَقَ عَلَيْهِ
যে অভিমতটি প্রসিদ্ধ ও সর্বসম্মত
بَيْنَ أَهْلِ الْعِلْمِ بِالأَخْبَارِ وَالرِّوَايَاتِ
খবর ও হাদিস শাস্ত্রের ইমামগণের মাঝে
قَدِيمًا وَحَدِيثًا
অতীত ও বর্তমানে
أَنَّ كُلَّ رَجُلٍ ثِقَةٍ
কোন নির্ভরযোগ্য রাবী
رَوَى عَنْ مِثْلِهِ حَدِيثًا
(যদি) অনুরূপ কোন রাবী থেকে কোন হাদিস বর্ণনা করেন
وَجَائِزٌ مُمْكِنٌ لَهُ لِقَاؤُهُ وَالسَّمَاعُ مِنْهُ
আর ঐ রাবী তার মারবী আনগুর সাক্ষাৎ লাভ করা এবং তার থেকে সরাসরি শোনার সম্ভাবনা থাকে
لِكَوْنِهِمَا جَمِيعًا كَانَا فِي عَصْرٍ وَاحِدٍ
কারণ তারা দুজন সমসাময়িক ছিলেন যে,
وَإِنْ لَمْ يَأْتِ فِي خَبَرٍ قَطُّ
যদিও কখনও কোন রেওয়ায়েতে এটা প্রমাণিত না হয় যে,
أَنَّهُمَا اجْتَمَعَا
তারা দুজন একত্রিত হয়েছেন
وَلاَ تَشَافَهَا بِكَلاَمٍ
এবং মুখোমুখি দুজনে কথাবার্তা বলেছেন
فَالرِّوَايَةُ ثَابِتَةٌ
এই রেওয়ায়েতটি প্রমাণিত হবে। এই রেওয়ায়েতটি প্রমাণিত হবে।
وَالْحُجَّةُ بِهَا لاَزِمَةٌ
এবং এর দ্বারা দলিল দেওয়া যথার্থ হবে।
إِلاَّ أَنْ يَكُونَ هُنَاكَ دَلاَلَةٌ بَيِّنَةٌ أَ
তবে যদি এক্ষেত্রে সুস্পষ্ট কোন প্রমাণ থাকে যে,
أَنَّ هَذَا الرَّاوِيَ لَمْ يَلْقَ مَنْ رَوَى عَنْهُ
ঐ রাবী যার থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, তার সাথে আদৌ কোন সাক্ষাৎ হয়নি
أَوْ لَمْ يَسْمَعْ مِنْهُ شَيْئًا
কিংবা তার থেকে কিছু শোনেন নি (তাহলে এ রকম রেওয়ায়েত দ্বারা দলিল দেওয়া যাবে না। )
أَمَّا وَالأَمْرُ مُبْهَمٌ
কিন্তু যেখানে বিষয়টি অস্পষ্ট,
عَلَى الإِمْكَانِ الَّذِي فَسَّرْنَا
এবং এমন সন্দেহ বিদ্যমান রয়েছে যে, যার ব্যাখ্যা আমি দিয়েছি (অর্থাৎ রাবী ও মারবী আনহুর সাথে সাক্ষাতের সম্ভাবনা)
فَالرِّوَايَةُ عَلَى السَّمَاعِ أَبَدًا
তাহলে রেওয়ায়েতটি সর্বদা সরাসরি শ্রবণের উপর প্রযোজ্য হবে
حَتَّى تَكُونَ الدَّلاَلَةُ الَّتِي بَيَّنَّا.
যাবৎ না ঐ বিষয়টি কোন প্রমাণ পাওয়া যায়, যা আমা বর্ণনা করেছি।
فَيُقَالُ لِمُخْتَرِعِ هَذَا الْقَوْلِ
সুতরাং বলা হবে ঐ মতবাদের জনককে
الَّذِي وَصَفْنَا مَقَالَتَهُ
যার মতামতের বিবরণ আমরা দিয়েছি
أَوْ لِلذَّابِّ عَنْهُ
কিংবা তার সহযোগীকে
قَدْ أَعْطَيْتَ فِي جُمْلَةِ قَوْلِكَ
আপনি আপনার কথা-বার্তার মধ্যে এটা মেনে নিয়েছেন যে,
أَنَّ خَبَرَ الْوَاحِدِ الثِّقَةِ
একজন সিকাহ রাবীর রেওয়ায়েত
عَنِ الْوَاحِدِ الثِّقَةِ
আরেকজন সিকাহ রাবী থেকে
حُجَّةٌ
শরিয়তের দলিল (হিসেবে গণ্য হবে)
يَلْزَمُ بِهِ الْعَمَلُ
এবং তদনুযায়ী আমল করা আবশ্যক হবে
ثُمَّ أَدْخَلْتَ فِيهِ الشَّرْطَ بَعْدُ فَقُلْتَ
………..
তারপর আমি আমার বক্ত্যব্য দেয়ার পর শর্ত আরোপ করেছি,আর বলেছি যে
حَتَّى نَعْلَمَ أَنَّهُمَا قَدْ كَانَا الْتَقَيَا مَرَّةً فَصَاعِدًا
যতক্ষন না আমরা জানতে পারছি, তারা উভয়ে জীবনে অন্তত একবার বা তার চেয়ে বেশি একত্রিত হয়েছেন।
أَوْ سَمِعَ مِنْهُ شَيْئًا
এবং রাবী মারবী আনহু থেকে সরাসরি কোন হাদিস শুনেছেন
فَهَلْ تَجِدُ هَذَا الشَّرْطَ
তাহলে আপনি কি এ শর্তটি পেয়েছেন
الَّذِي اشْتَرَطْتَهُ
যেটি আরোপ করেছেন।
عَنْ أَحَدٍ يَلْزَمُ قَوْلُهُ
এমন কোন ব্যক্তি থেকে, যার মতামত মেনে নেওয়া আবশ্যক হবে।
وَإِلاَّ فَهَلُمَّ دَلِيلاً عَلَى مَا زَعَمْتَ.
অন্যথায়, (যদি না পেয়ে থাকেন তাহলে) আপনার দাবীর স্বপেক্ষে অন্য কোন দলিল পেশ করুন।