ইসলামি শরিয়তে পুরুষদেরকে মসজিদে জামাতবদ্ধ হয়ে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ওজর না থাকলে ঘরে বসে নামাজ আদায়ের ব্যপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এর পেছনে কয়েকটি রহস্য রয়েছে।
- নামাজের সময় অলসতা কাজ করে। গড়িমসি করে ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়; কিন্তু নামাজ আদায় করা হয় না।
- ঘরে নামাজে দাড়ালে মাথায় নানাবিধ চিন্তা-পেরেশানী কাজ করে। ফলে দ্রুত নামাজ শেষ হয়।
- মসজিদ আল্লাহর ঘর। জামে মসজিদে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করলে বহু গুণ সওয়াব পাওয়া যায়।
- দৈনন্দিন পাঁচ বার মসজিদে নামাজ আদায় করা হলে পাঁচ বার প্রতিবেশীদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয়। তাদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। এটি সামাজিক বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করে তুলে।
- পারস্পরিক দূরত্ব দূর হয়।
মসজিদে নামাজ আদায় সংক্রান্ত হাদিস:
📖 আবু মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি মুআজ্জিনের আযান শুনেও মসজিদে উপস্থিত হয় নি অথচ তার কোনো ওযরই ছিলো না তা হলে তার সালাতই হবে না”। – ইবন আবী শায়বাহ, হাদীস নং ৩৪৮২।
📖 হযরত উকবা ইবন আমির (রা) থেকে নবী (সা) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন: কেউ যখন উযূ করে সালাত আদায়ের জন্য মসজিদে আসে এবং মনযোগসহ সালাত আদায় করে, তখন দুইজন অথবা (নবী বলেছেন) লেখক ফিরিশতা তার প্রতি পদক্ষেপের বিনিময়ে দশটি করে নেকী লিখেন। মসজিদে বসে সালাত আদায়কারী, দাঁড়িয়ে সালাত আদায়কারী তুল্য। ঘর থেকে বের হওয়ার পর প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত তাকে মুসল্লীদের অন্তর্ভুক্ত কর হয়।
(আহমদ, আবু ইয়ালা ও তাবারানী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাবারানীর কোন কোন সূত্র অনুযায়ী রিওয়ায়াতটি সহীহ। ইবন খুযায়মা ও ইবন হিব্বান তাঁদের ‘সহীহ’ গ্রন্থে এ রিওয়ায়াতটি দুই জায়গায় পৃথক পৃথকভাবে বর্ণনা করেছেন।) – আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ (আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব)
হাদীস নং: ৪৬২
📖 হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের জন্য মসজিদে আসে, তার প্রতি পদক্ষেপে গুনাহ মোচন করা হয় এবং একটি করে নেকী লেখা হয়, আর তা আসা-যাওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
(আহমদ হাসান সনদে, তাবারানী এবং ইবনে হিব্বান তাঁর ‘সহীহ’ গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।) – আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহ. (আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব)
হাদীস নং: ৪৬৩
📖 হযরত উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি: যে ব্যক্তি উযূ করবে আর উত্তমরূপে উযূ করবে এবং পায়ে হেঁটে ফরয সালাত ইমামের সাথে আদায় করবে, তার গুনাহ ক্ষমা করা হবে।
(এ হাদীসটিও ইবনে খুযায়মা বর্ণনা করেছেন।) – আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহ. (আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব)
হাদীস নং: ৪৬৫
📖 হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: যে ব্যক্তি সকাল বা সন্ধ্যায় মসজিদে যায়, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করবেন, যতবার সকাল-সন্ধ্যায় যায়, ততবারই।
(বুখারী, মুসলিম এবং অপরাপর হাদীস গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।) -আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহ. (আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব)
হাদীস নং: ৪৮০