তাকওয়া মানুষকে আল্লাহর পথে পরিচালনা এবং গোনাহের পথ পরিহার করতে সহায়তা করে। যে তাকওয়া অবলম্বন করে, তাকে মুত্তাকী বলে। একজন মুত্তাকী বড়ই সৌভাগ্যবান। সর্বদা আল্লাহর রহমত তার উপর বর্ষিত হতে থাকে। দুনিয়াতেও সে রহমতে ছায়ায় বেষ্টিত থাকে। পরকালেও তার জন্য থাকে অসংখ্য নিয়ামত।
তাকওয়া অর্থ কি
ব্যবহারিক অর্থে তাকওয়া বলতে পরহেজগারি, খোদা ভীতি, আত্মশুদ্ধি ইত্যাদি বোঝায়। পরিভাষায়, আল্লাহ তায়ালার ভয়ে যাবতীয় অন্যায়, অত্যাচার ও পাপকাজ থেকে বিরত থাকাকে তাকওয়া বলা হয়। আল্লাহ তায়ালা মানব জাতি সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য; অন্যায়, অশ্লীল ও মন্দকাজ থেকে বিরত থাকার জন্য। আর এরই নাম তাকওয়া। যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে তাকে মুত্তাকী বলে।
উপর্যুক্ত আলোচনা দ্বারা এ কথা সুস্পষ্ট হয়েছে যে, তাকওয়া ইমানের পরবর্তী ধাপ। এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য বিভিন্ন পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।
তাকওয়ার ১০ টি ইহকালীন উপকারিতা
১. রিজিক বৃদ্ধি পায়।( সূরা তালাক:২-৩)
২. দুনিয়ার কাজ সহজ হয়।(সূরা তালাক:৪)
৩. শয়তানের অনিষ্ট থেকে সুরক্ষা দেয়।(সূরা আ’রাফ:২০১)
৪. আসমান, জমিনের বরকত উন্মুক্ত হয়।(সূরা আ’রাফ:৯৬)
৫. হক ও বাতিল এর মধ্যে পার্থক্য করা যায়।(সূরা আনফাল:২৯)
৬. কাফেরদের অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তা লাভ।(সূরা আলে ইমরান:১২০)
৭. আমল বিশুদ্ধ হয় এবং পাপ মোচন হয়।(সূরা আহযাব:৭০-৭১)
৮. আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যায়। ( সূরা আলে ইমরান:৭৬)
৯. ইলম ও জ্ঞান অর্জন হয়।(সূরা বাকারা:২৮২)
১০. প্রতিদান নষ্ট হয় না।( সূরা ইউসুফ:৯০)
তাকওয়া সংক্রান্ত আয়াত
يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقولوا قَولًا سَديدًا
হে ঐ সকল লোকেরা যারা ইমান এনেছ, তোমরা তাকওয়া অর্জন করো এবং উত্তম কথা বল। [সূরা আল আহ্যাব – ৭০]
يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقاتِهِ وَلا تَموتُنَّ إِلّا وَأَنتُم مُسلِمونَ
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিত ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। [সূরা আলে ইমরান – ১০২]
وَلِلَّهِ ما فِي السَّماواتِ وَما فِي الأَرضِ ۗ وَلَقَد وَصَّينَا الَّذينَ أوتُوا الكِتابَ مِن قَبلِكُم وَإِيّاكُم أَنِ اتَّقُوا اللَّهَ ۚ وَإِن تَكفُروا فَإِنَّ لِلَّهِ ما فِي السَّماواتِ وَما فِي الأَرضِ ۚ وَكانَ اللَّهُ غَنِيًّا حَميدًا
আর যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমিনে সবই আল্লাহর। বস্তুত আমি নির্দেশ দিয়েছি তোমাদের পূর্ববর্তী গ্রন্থের অধিকারীদেরকে এবং তোমাদেরকে যে, তোমরা সবাই ভয় করতে থাক আল্লাহকে। যদি তোমরা তা না মান, তবে জেনো, সে সব কিছুই আল্লাহ তা’আলার যা কিছু রয়েছে আসমান সমূহে ও যমিনে। আর আল্লাহ হচ্ছেন অভাবহীন, প্রশংসিত। [সূরা নিসা- ১৩১]
উপর্যুক্ত আয়াতের দ্বারা তাকওয়া অর্থ কী? তা বুঝে আসে। মূলত তাকওয়া হচ্ছে খোদা ভীতির নাম।
পরিশেষে, তাকওয়া অর্থ কি এবং কেন তাকওয়া অবলম্বন করা প্রয়োজন এবং এ সংক্রান্ত আয়াত উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন। আমীন।