জিকির আল্লাহ তায়ালার নিকট শ্রেষ্ঠ ও উত্তম আমল। যিকির বান্দাদের জন্য সহজ, হিসাবের বাটখারায় অত্যন্ত ভারী, মর্যাদা বৃদ্ধিকারী, মানুষকে আজাব হতে রক্ষাকারী। অধিক পরিমাণে জিকির করা ইমানের আলামত আর জিকিরের স্বল্পতা মুনাফিকীর আলামত।
জিকিরের ফজিলত
জিকিরের বেশ কিছু ফজিলত রয়েছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হোন, শয়তান পালিয়ে যায়, পেরেশানি দূর হয়, উদ্যমতা বৃদ্ধি পায় এবং গোনাহ মাফ হয়। আর তা কল্যাণের মাধ্যম।
এর মাধ্যমে অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। জিকিরের মজলিশকে ফেরেশতাদের মসজিদের সাথে তুলনা করা হয়। ফেরেশতাগণ তাতে রহমত, বরকত নিয়ে অবতরণ করেন।জিকির করা প্রতিদানের বিবেচনায় স্বর্ণ, রূপা দান করা, আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা, গোলাম আজাদ করার সমান।
যে ব্যক্তি দৈনিক একশত বার এই দোয়াটি পাঠ করবে। সে দশজন গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে। তার জন্য একটি নেকি লেখা হবে এবং একটি গোনাহ তার আমলনামা থেকে মুছে ফেলা হবে।
এমনকি এই দোয়া পাঠকারীকে সেদিন সন্ধ্যা হওয়া পর্যন্ত শয়তান কূটকৌশল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে।
দোয়াটি হল এই-
لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير
বাংলা উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর।
জিকিরের প্রকার:
জিকির দুই প্রকার। প্রথমত, এমন জিকির যা সময় বা নির্দিষ্ট ইবাদতের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন: নামাজে ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা’, ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম’ ইত্যাদি পাঠ করা। সকাল-সন্ধ্যায় পাঠের দোয়াগুলো। বিপদাপদে সম্মুখীন হলে জিকির করা।
দ্বিতীয়ত, এমন জিকির যা সময় বা নির্দিষ্ট ইবাদতের সাথে সম্পৃক্ত নয়। যেমন: সর্বদা ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদু লিল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবর’ ইত্যাদি দোয়া পাঠ করা।
মুমিন সর্বদা তার জ্বিহবাকে জিকিরের মাধ্যমে সিক্ত রাখে। দিন-রাত সর্বদায় জিকিরে লিপ্ত থাকে।
দোয়ার ফজিলত:
দোয়া বিশেষ এক ইবাদত। আল্লাহ তায়ালা তার কাছে চাওয়া পছন্দ করেন। যে আল্লাহর কাছে চায় না। তার প্রতি রাগান্বিত হোন। বান্দার কৃত দোয়া হয়ত আল্লাহ তায়ালা সরাসরি কবুল করেন অথবা এর বিনিময়ে তাকে সওয়াব দেন অথবা তার থেকে অনুরূপ মন্দ বিষয় থেকে মুক্তি দান করেন। যতক্ষণ না সে কোনো গোনাহে লিপ্ত হয় অথবা আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করে।
দোয়া কবুলের সময়:
দোয়া কবুলের সর্বোত্তম সময় হলো: রাতের শেষ তৃতীয়াংশ, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়, শুক্রবারের সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত। এ সময়গুলো দোয়া কবুলের বিশেষ সময়। তাছাড়া, সিজদারত অবস্থায় বান্দা আল্লাহ তায়ালার অধিক নিকটবর্তী হোন।
দোয়াকারীর জন্য কর্তব্য:
দোয়াকারীর দোয়াতে কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি বাব বার প্রার্থনা করবে এবং দোয়া কবুল হওয়ার আশা রাখা। দোয়ার শুরুতে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা এবং রাসুল সা. এই উপর দুরুদ পাঠ করা। কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত গভীর মর্ম সম্বলিত দোয়া করা।
*القراءة العرابية থেকে গৃহীত।