হুদায়বিয়ার সন্ধির পর খায়বারের মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ ইহুদীদের বৃদ্ধি পেতে লাগল এবং রসুলুল্লাহ সা.-এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন গোত্রকে উসকে দিতে লাগল। তাই মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই ইহুদি শক্তিকে পুরোপুরি নিঃশেষ করে দিতে চাইলেন। যেন মুসলমানগণ নিরাপদে বসবাস করতে পারেন।
তিনি ৮ম হিজরীর রজব মাসে ১৬০০ সাহাবায়ে কেরাম সাথে নিয়ে খায়বারের নিকটস্থ জায়গায় পৌঁছেন। সময়টি ছিল রাত্র। তাই তিনি সেখানে রাত কাটান। কেননা মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর অভ্যাস ছিল, তিনি কোনো সম্প্রদায়ের নিকট রাতে আগমন করতে সকাল না হওয়া পর্যন্ত তাতে প্রবেশ করতেন না। যখন সকাল হলো, তিনি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন।
খায়বারবাসী মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. কে দেখে ভয়ে পালিয়ে গেল। তারা বলতে লাগল: মুহাম্মাদ.. আল্লাহও শপথ! মুহাম্মদ… সৈন্য বাহিনী। তারা পালিয়ে দুর্গে আশ্রয় নিল। নবীজি সা. বলেন: “আল্লাহ মহান, খায়বার ধ্বংস হয়ে গেছে; আল্লাহ মহান, খায়বার ধ্বংস হয়ে গেছে; যদি আমরা একটি সম্প্রদায়ের আঙ্গিনায় নেমে যাই, তবে তা হয় সতর্ককারীদের জন্য একটি খারাপ সকাল।”
খায়বার যুদ্ধ
উভয় পক্ষের মধ্যে একটি ভয়ানক যুদ্ধ শুরু হয়; এক পর্যায়ে আল্লাহর অনুগ্রহে সেই দুর্গগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী আলী ইবনে আবী তালিবের নেতৃত্বে মুসলমানগণ জয় করেন। খায়বারবাসী অন্যরা একের পর এক আত্মসমর্পণ করতে শুরু করে। খায়বারবাসী নবী সা.-এর নিকট সন্ধির প্রস্তাব পাঠায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার ত্যাগ করার শর্তে তা গ্রহণ করেন।
ফলে তারা তাতে রাজি হয় এবং দুর্গগুলো মুসলমানদের হাতে বুঝিয়ে দেয়। এই যুদ্ধে যাদের বন্দী করা হয়েছিল তাদের মধ্যে ছিলেন সাইয়্যিদা সাফিয়া বিনতে হুয়ায় রা.; যিনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিয়ে করেছিলেন।
নবী করীম সা. খায়বার থেকে সমস্ত ইহুদীদের বিতাড়িত করতে চেয়েছিলেন। ইহুদিরা বলল: হে মুহাম্মদ! আমাদেরকে এখানে থাকার সুযোগ দিন, আমরা এখানে চাষাবাদ করবো এবং দেখভাল করবো। নবী সা. এবং তাঁর সাহাবীদের কাছে এ ভূমি চাষাবাদ করার মতো গোলাম ছিল না। তাই নবী সা. সম্মত হন এবং তাদেরকে খায়বার প্রদান করেন এই শর্তে যে, ফসলের অর্ধেক তারা মুসলমানদেরকে প্রদান করবে। এভাবেই মহান আল্লাহর রহমতে খায়বার মুসলমানদের দখলে আসে।
এই যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জাফর ইবনে আবু তালেব রা. হাবশা থেকে তার সাথী সঙ্গী নিয়ে ফিরে আসেন। যখন সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. আনন্দিত হয়ে বলেন: আল্লাহর শপথ! আমার জানা নেই যে, আমি কোনটিতে বেশি আনন্দিত। খাইবার বিজয় করার কারণে নাকি জাফরের আগমনের কারণ।
মুতার যুদ্ধ
হিজরতের অষ্টম বছরে, নবী সা. হারিস বিন উমাইর আল-আজদী রা. কে তার চিঠি সহ বুসরার শাসক আল-গাসসানীর কাছে প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু হারিস রা.কে অপমান করা হয়, তখন তিনি গাসাসিনাতে হত্যা করা হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. এ ব্যাপারে জানতে পেরে তিন হাজার যোদ্ধার একটি সৈন্য বাহিনী প্রস্তুত করেন। তিনজন বড় বড় সাহাবীকে তাতে আমির নিযুক্ত করেন। তারা হলেন: যায়েদ বিন হারিছা রা., তিনি আহত হলে জাফর বিন আবি তালিব রা., তিনি আহত হলে আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা রা.।
মুসলিম বাহিনী বলতে লাগল এমনকি সিরিয়ার সীমানায় গিয়ে পৌঁছল। সেখানে তারা শত্রু বাহিনীর সংখ্যা দেখে ঘাবড়ে গেল। রোমানদের সৈন্য ছিল প্রায় ১ লক্ষের কাছাকাছি। মুসলমানগণ লড়াইয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান। আব্দুল্লাহ ইবনে আবু রবাহা বলেন: হে সম্প্রদায়, আল্লাহর শপথ! আমরা তাদের সাথে শক্তি বা সংখ্যা দ্বারা যুদ্ধ করি না। আমরা দ্বীনের জন্য তাদের সাথে যুদ্ধ করি। লোকেরা বলল: আপনি সত্য বলেছেন।
উভয় দলের মাঝে যুদ্ধ শুরু হলো। হযরত যায়েদ রা. শহীদ হওয়া পর্যন্ত পতাকা বহন করলেন। তারপর জাফর রা. শহীদ হওয়া পর্যন্ত পতাকা বহন করলেন। তারপর আব্দুল্লাহ বিন রওয়াহা রা. শহীদ হওয়া পর্যন্ত পতাকা বহন করলেন। লোকেরা খালিদ বিন ওয়ালিদ রা. কে আমির নির্বাচন করল। তিনি তার বৃদ্ধিমত্তায় নিঃশেষ মুসলমানদেরকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। তাদেরকে নিয়ে মদিনায় ফিরে যান। এই বৃহৎ সৈন্য দলের সাথে যুদ্ধ করা সত্ত্বেও মুসলমানদের মধ্যে মাত্র ১২ জন শহীদ হন।
এদিকে তাদের আগমনের পূর্বেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. তিন জন আমির শহীদ হওয়ার ব্যাপারে সংবাদ প্রদান করেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ রা. মদিনায় ফিরে আসলে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ‘সাইফুল্লাহিল মাসলুল’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
ঐতিহাসিক মক্কা বিজয়
হিজরীর অষ্টম বছরের শাবান মাসে, মুতাহ যুদ্ধের তিন মাস পর, কুরাইশ রাসুলুল্লাহ সা.-এর সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করে এবং খুজাআ গোত্রের বিশজন লোককে হত্যা করতে বনু বকরকে সমর্থন করে। তাই খুযাআ গোত্র নবীর কাছে সাহায্য চাইলেন। তাদের মাঝে এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর মাঝে সন্ধি ছিল। তিনি তাদেরকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। তাই মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. মুসলমানদেরকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি তাদেরকে মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেদিন মুসলিম সৈন্য সংখ্যা ছিল দশ হাজার যোদ্ধা। মক্কার নিকটবর্তী হলে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. শত্রুদের সামনে শক্তি প্রদর্শনের জন্য আগুন প্রজ্বলিত করার আদেশ দেন। কুরাইশরা তা দেখে ভয় পেয়ে যায়। তারা আবু সুফিয়ান বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পাঠাল এবং আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিবের সাথে তাদের দেখা হল।
তিনি তাকে আল্লাহর মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর কাছে নিয়ে গেলেন। সে সেখানে ইসলাম গ্রহণ করে ফিরে এসে যা দেখেছে তা সম্পর্কে সংবাদ দিল এবং রাসুলের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়ে সংবাদ দিল যে, তাদের মধ্যে যে তার নিজ গৃহে অথবা আবু সুফিয়ানের ঘরে আশ্রয় নিবে, সে নিরাপত্তা লাভ করবে।
মক্কা বিজয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর বিনয়ীতা:
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. তার সাথীদের নিয়ে বিনয়ীভাবে মাথা নিচু করে মক্কায় প্রবেশ করলেন। তার মাথা গাধার পিঠের সাথে লেগে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। তিনি সাহাবায়ে কেরামকে আদেশ দেন যেন তাদের সাথে কেউ যুদ্ধ না করলে তিনি যুদ্ধ না করেন। তিনি মক্কার উঁচু ভূমি দিয়ে প্রবেশ করেন আর খালিদ বিন ওয়ালিদ রা. কে মক্কার নিম্ন ভূমি দিয়ে প্রবেশ করার আদেশ দেন। কুরাইশগণ আত্মসমর্পণ করেন এবং আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে মহা বিজয় দান করেন।
মক্কা বিজয়ের পর মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর নিকট মক্কার অধিবাসীরা মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর নিকট সমবেত হন। তিনি তাদের ব্যাপারে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দেন। তবে ১৫ জন ব্যতীত; যারা গুরুতর অপরাধী ছিল। অবশ্য তাদের মধ্য থেকে কাউকে তিনি ক্ষমা করে দেন।
মক্কা বিজয়ের দিন যাদেরকে ক্ষমা করা হয়নি:
১- আব্দুল্লাহ বিন খাতাল। তাকে হত্যার কারণ হলো: ১. মুসলামান গোলাম হত্যা করা। ২. মুরতাদ হওয়া।। ৩. মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর বাপারে কুৎসা রটানো।
২,৩ – ফারতানাই, কুরাইবা। এরা উভয়েই আব্দুল্লাহ বিন খাতালের সঙ্গিনী ছিল। তাদের একজন ইসলাম গ্রহণ করে আর অপরজনকে হত্যা করা হয়।
৪- হুয়াইরিস বিন নুকাইজ। হযরত আলী রা. তাকে হত্যা করেন।
৫- মিকইয়াস বিন হুবাবা। হত্যার কারন: ১. একজন আনসারী সাহাবীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা। ২. মুরতাদ হওয়া।
৬. হারেস বিন হিশাম আল মাখযুমী। হত্যার কারন: মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর শানে অশ্লীল কবিতা আবৃত্তি করত।
৭- সারা। কেউ বলেন, তাকে হত্যা করা হয়েছে আবার কেউ বলেন, সে ইসলাম গ্রহণ করেছে।
৮- হুবায়রা বিন আবু ওয়াহাব। সে নাজরানে মুশরিক অবস্থায় মারা যায়।
৯- আব্দুল্লাহ বিন সাদ। সে পরবর্তীতে উসমান রা.-এর মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করে।
১০- ইকরিমা বিন আবু জাহেল। সে পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে।
১১- হাব্বার কিন আসওয়াদ। সে পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে।
১২- ওয়াহশী বিন হরব। সে পরবর্তীতে মদিনায় গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে।
১৩- আব্দুল্লাহ বিন জিবারা। সে পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে।
১৪- কাব বিন জুহাইর: সে পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে।
১৫- হিন্দা বিন উতবা। সে মক্কা বিজয়কালে মুসলমান হয়।
গজওয়াতুল হুনাইন:
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. যখন জানতে পারলেন যে, হাওয়াযিন এবং ছাকিফ গোত্র মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বড় একটি দল নিয়ে তাদের প্রতিহত করতে বেরিয়ে পড়েন; যার সংখ্যা ছিল ১২ হাজার।
সৈন্য সংখ্যার আধিক্য দেখে তাদের কেউ কেউ ধোঁকায় পড়ে গেলেন। “হাওয়াযিন” এবং “ছাকিফ” গোত্রের শত্রুদের সৈন্যদল হুনাইন উপত্যকায় আগেই পৌঁছল এবং অতর্কিত হামলা করার জন্য তারা মুসলমানদের আগমনের অপেক্ষা করছিল।
মুসলমানগণ সেই সংকীর্ণ পথে প্রবেশ করলে তারা অতর্কিত ভাবে উপর থেকে মুসলমানের উপর তীর বর্ষণ করতে থাকে। ফলে মুসলমানগণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পলায়ন করতে থাকেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা. ও কতিপয় সাহাবী ময়দানে দাঁড়িয়ে থাকেন।
তিনি মুসলমানদেরকে ডেকে বলেন:
أنا النبي لا كذب. أنا بن عبد المطلب
অর্থ: আমি নবী মিথ্যা বলি না। আমি ইবনে আবদুল মুত্তালিব।
মুসলমানগণ মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা.-এর আহ্বান শুনে ময়দানে যুদ্ধের জন্য পুনরায় ফিরে আসে। তারা সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বিজয় দান করেন। মুশরিকরা তাদের স্ত্রী, সন্তান, সম্পদ রেখে পলায়ন করে।
তাবুকের যুদ্ধ
নবী জানতে পারলেন যে, রোমান এবং আরব খ্রিস্টানরা মদিনা আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তিনি সাহাবায়ে কেরামকে মদিনায় আক্রমণের আগেই রোমানদের ভূমিতে হঠাৎ আক্রমণ করে দিকভ্রান্ত করে দেওয়ার জন্য তাবুকে রওনা হওয়ার জন্য আহ্বান করেন। আরব গোত্রগুলো রাসুলের আদেশে একত্রিত হতে থাকে। এ যুদ্ধে হযরত উসমান, আব্দুর রহমান বিন আউফ, আবু বকর রা. তাদের অর্থ সম্পদ দানে প্রতিযোগিতা করতে থাকেন।
সৈন্যবাহিনী প্রস্তুত করে নবী করীম সা. ৯ম হিজরীর রজব মাসে ৩০ হাজার যোদ্ধা নিয়ে তাবুকের দিকে রওনা হন। কিন্তু সফরের পাথেয় সামান্য ছিল এবং আরোহণের জন্য উট, ঘোড়াও পর্যাপ্ত ছিল না। তীব্র উত্তাপের সময়ে প্রতি ১৮ জন লোক একটি উট পালাক্রমে আরোহণ করত। মদীনা ও তাবুকের মধ্যে দূরত্বও ছিল দীর্ঘ।
তাই এই যুদ্ধকে ‘যাইশুল উসরা’ ও বলা হয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাবুকে পৌঁছেন, তখন তিনি কাউকে দেখতে পাননি। শত্রুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে এবং আল্লাহ তাদের অন্তরে ভয় সৃষ্টি করে দেন। নবীজি সা. তাবুকে প্রায় বিশ দিন যাবৎ অবস্থান করেন। যে সময় তিনি ঐ অঞ্চলের শাসকদের সাথে চুক্তি করেন এই শর্তে যে, তারা তাদের ধর্মের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার বিনিময়ে জিজিয়া প্রদান করবে।
এরপর নবী সা. বিজয়ী বেশে ফিরে আসেন এবং আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে যুদ্ধের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করেন। এটি ছিল নবীজি সা.-এর সর্বশেষ গজওয়া; যাতে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। এটি আরব উপদ্বীপে মুসলমানদের প্রভাব বিস্তার এবং তাদের শক্তিকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক প্রভাব ফেলেছিল।
প্রতিনিধিদলের বছর:
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাবুকের যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর, বিভিন্ন গোত্র তাদের প্রতিনিধি দল পাঠাতে শুরু করল তাদের ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা করার জন্য। যেমন: সাকিফ, বনি তামিম, বনি আমের এবং অন্যান্যরা। তারপর আরব ভূখণ্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিধি দল লাগাতার আসতে লাগল। হিজরতের নবম বর্ষের শেষের দিকে বিপুল সংখ্যক প্রতিনিধিদলের আগমনের ফলে সে বছরকে ‘আমুল উফুদ’ বা ‘প্রতিনিধিদলের বছর’ নামে নামকরণ করা হয়।