আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কিতালের আদেশ পাওয়া পর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আল্লাহর রাস্তায় গজওয়া এবং সারিয়ার জন্য মুসলমানদেরকে প্রস্তুত করতে শুরু করেন। তিনি মদিনাকে শত্রুমুক্ত করা, পার্শ্ববর্তী গোত্রগুলোর সাথে অত্যাচার না করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং কুরাইশদের ব্যবসায়ী কাফেলা অনুসন্ধান; মুসলমানগণ মুশরিকদের কাছে যা রেখে এসেছে, তা পুনঃ প্রত্যাশার জন্য একের পর এক সারিয়া প্রেরণ করতে লাগলেন।
এ সকল গজওয়া এবং সারিয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল: তাদের অন্তরে ভয়-ভীতি ঢুকিয়ে দেওয়া; যেন তারা মদিনা আক্রমণের কল্পনাও না করতে পারে।
সিফুল বাহার যুদ্ধ:
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর প্রেরিত সর্বপ্রথম সারিয়া হলো: সিফুল বাহার; যা তিনি প্রথম হিজরীর রমজান মাসে প্রেরণ করেন। সারিয়ার আমির ছিলেন রাসুল সা.-এর চাচা হযরত হামজা বিন আব্দুল মুত্তালিব রা.। এই সারিয়া অভিযানে কোন প্রকার যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম যে গাজওয়ায় অংশগ্রহণ করেন, তা ছিল গজয়াতুল আবওয়া। এটি দ্বিতীয় হিজরী সনের সফর মাসে সংঘটিত হয়। এ যুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল: কুরাইশদের ব্যবসায়িক কাফেলা প্রতিরোধ করা। তবে রাসুল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম কাফেলার নাগাল না পেয়ে যুদ্ধ ছাড়াই মদিনায় ফিরে আসেন। রাসুল সা. তার সাহাবীদের নেতৃত্বে বিভিন্ন সারিয়া প্রেরণ করতে থাকেন এবং তার নেতৃত্বে গাজওয়াগুলো পরিচালিত হতে থাকে।
আবওয়া: মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী, তবে মদিনা থেকে নিকটবর্তী ইয়ানবুয়া এক কাছাকাছি প্রসিদ্ধ একটি জনপদের নাম।
গজওয়াতুল বুওয়াত / বুওয়াত যুদ্ধ:
২য় হিজরীর রবিউল আওয়াল মাসে কুরাইশদের বাণিজ্যিক কাফেলা শাম থেকে ফিরে আসার সংবাদ পেয়ে তাদের উদ্দেশ্যে রাসুল সা. ২০০ জন সাহাবী নিয়ে রওনা হন। তিনি সেখানে পৌঁছার পূর্বেই কুরাইশদের কাফেলা নিরাপদে মক্কা চলে যায়। রাসুল সা. সেখানে ৭ দিন অবস্থান করে কোনো প্রকার যুদ্ধ ছাড়াই মদিনাতে ফিরে আসেন।
বুয়াত হল: জুহাইরা পাহাড় সমূহের মধ্যে একটি পাহাড়ের নাম।
গজওয়াতে উশায়রা / উশায়রা যুদ্ধ
২য় হিজরীর জুমাদাল উলা মাসে কুরাইশদের শাম অভিমুখী বাণিজ্যিক কাফেলাকে প্রতিরোধ করার জন্য রাসুল সা. ১৫০ বা ২০০ জন সাহাবী নিয়ে রওনা হন। তিনি ইয়ানবুয়া নামক স্থানে পৌঁছার পূর্বেই আবু সুফিয়ান কুরাইশদের কাফেলা নিয়ে নিরাপদে শামে চলে যায়। রাসুল সা. সেখানে ২৫ দিন অবস্থান করে কোনো প্রকার যুদ্ধ ছাড়াই মদিনাতে ফিরে আসেন। বদর যুদ্ধের পূর্বে সর্বশেষ আব্দুল্লাহ বিন জাহাশের নেতৃত্বে মক্কা ও তায়েফের মধ্যবর্তী এলাকা নাখলায় সারিয়ে প্রেরণ করেন।